সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের জুন্টা সরকার দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ করেছে। দিন দুই আগে ক্ষমতাসীন আন সাং সু কির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে ফেলে দিয়ে প্রশাসনের দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী।মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে গোটা বিশ্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। আগেই এনিয়ে মুখ খোলে আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বহু দেশ। মিয়ানমারের অভ্যন্তরেও শুরু হয়েছে প্রতিরোধ। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে এরপরই দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ করেছে জুন্টা সরকার। মিয়ানমারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের ৫ কোটি ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের ফেসবুক ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দিতে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। দেশের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিফলিত জনমতকে অগ্রাহ্য করে এমন অভ্যুত্থান প্রক্রিয়াকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গুতেরেস বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের নেতাদের অবশ্যই বুঝিয়ে দিতে হবে যে, এটা ক্ষমতা দখল ও দেশ শাসনের কোনও উপায় হতে পারে না। মায়ানমারে সাংবিধানিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য একমত হবে বলে আমি আশাবাদী। যদিও মায়ানমারের একটি প্রথমসারির সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, স্বার্থে আঘাত না লাগা পর্যন্ত মায়ানমারে সেনা শাসনকে চিন কোনও আঘাত করবে না।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে রাষ্ট্রসংঘের অবস্থান জানার পর সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও সরব হয়েছেন মায়ানমারের বাসিন্দারা। তাঁরা বলেছেন, দেশবাসীর কণ্ঠরোধ করতেই ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় কোপ পড়েছে।
যদিও মায়ানমারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সাফাই, দেশের কিছু মানুষ অস্থির পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর, গুজব, মিথ্যা তথ্য ইত্যাদি ছড়ানো হচ্ছে। সেই জন্যই সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফেসবুকের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। এমনকি ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপের মতো মেসেজিং অ্যাপগুলিও কাজ করছে না মায়ানমারে। নরওয়ে টেলিকম সংস্থা টেলিনরকে ফেসবুক ব্লক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে মায়ানমারে টুইটার এখনও চালু আছে বলে খবর।
যোগাযোগের সরঞ্জাম অবৈধভাবে আমদানির অভিযোগে আং সান সু কির বিরুদ্ধে মামলা করেছে সে দেশের পুলিশ। এই বিষয়ে তদন্তের জন্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আটক রাখা হবে সু কিকে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দুবছরের কারাদণ্ড হতে পারে সু কির।