Home Third Lead নাসার আগেই মঙ্গলে পৌঁছবে চিন

নাসার আগেই মঙ্গলে পৌঁছবে চিন

ছবি: ইন্টারনেট

নাসার আগেই মঙ্গল ছুঁয়ে ফেলবে চিন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলের কক্ষপথে পা দিতে চলেছে চিনের মঙ্গলযান তিয়ানওয়েন-১। তার আগেই লাল গ্রহের সাদা-কালো ছবি পাঠাল মহাকাশ থেকে। একুশের শুরুতে মঙ্গল গ্রহের প্রথম ছবি পাঠিয়ে বিজ্ঞানীমহলে হইচই ফেলে দিয়েছে চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

চিনের ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, মঙ্গলের দুটি গিরিখাতে ভরা এলাকার ছবি তুলেছে তিয়ানওয়েন-১। একটি স্কিয়াপ্যারেল্লি ক্রেটার ও অন্যটি গিরিখাতে ভরা ভ্যালেস মেরিনারিস। মঙ্গলের কক্ষপথের প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে দুই গহ্বরের ছবি তুলে পৃথিবীর গ্রাউন্ড স্টেশনে পাঠিয়েছে চিনের মঙ্গলযান।

Image result for China's space probe sends back its first image of Mars

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার ‘পারসিভিয়ারেন্স’ মিশনের আগেই মঙ্গলে মহাকাশযান পাঠিয়েছিল চিন। নাসা ও চিনের মঙ্গলযান উড়েছিল জুলাইতেই, তবে পারসিভিয়ারেন্সের আগেই তিয়ানওয়েন-১ পৌঁছেছিল মঙ্গলের কক্ষপথে।

চিনা মহাকাশযানের তিনটি ভাগ রয়েছে। মঙ্গলকে ঘিরে পাক খাবে এর অরবিটার, তাছাড়া রয়েছে ল্যান্ডার ও রোভার। মঙ্গলের মাটি খুঁড়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করবে রোভার।

মঙ্গলে পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি সেই ২০১১ সাল থেকেই শুরু করে চিন। প্রথম মিশনের তোড়জোড় ছিল রাশিয়ার সঙ্গে। রাশিয়ার তৈরি স্পেসক্রাফ্ট ফোবোস-গ্রান্টে চাপিয়েই চিনের স্পেসক্রাফ্টকে মঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেই মিশন ব্যর্থ হয়। এরপরে চিন নিজেই স্পেসক্রাফ্ট তৈরি করা শুরু করে দেয়। তিয়ানওয়েন-১ মিশনের জন্য স্পেসক্রাফ্ট বানিয়েছে ‘চিনা অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড  টেকনোলজি’ (CASC)। এই মিশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে বেজিংয়ের ন্যাশনাল স্পেস সায়েন্স সেন্টার (NSSC) ।

Image result for China's space probe sends back its first image of Mars

লং মার্চ ৫ রকেটে চেপে মঙ্গলে পৌঁছবে পাঁচ টন ওজনের তিয়ানওয়েন-১। এই লং মার্চ ৫ ওয়াই৪ কেরিয়ার চিনের সবচেয়ে বড় রকেট। তিয়ানওয়েন মিশনের জন্য এই রকেটকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। চিনা স্পেস সেন্টার জানিয়েছে, স্পেসক্রাফ্টের রকেট যাতে মঙ্গলের মাটিতে নিরাপদে ল্যান্ড করতে পারে তার জন্য সব ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে। প্যারাশুট, রেট্রোরকেট, এয়ারব্যাগ রয়েছে ল্যান্ডারে। মঙ্গলের মাটিতে অবতরণের পরেই কাজ শুরু করবে রোভার। এর সোলার প্যানেল সৌরশক্তিতে কাজ করবে। মঙ্গলের মাটির রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে তথ্য পাঠাবে গ্রাউন্ড স্টেশনে।

মঙ্গল-অভিযান নিয়ে এই মূহূর্তে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চিন ও আমেরিকার। নাসার পারসিভিয়ারেন্স নাকি চিনের তিয়ানওয়েন-১, কে আগে মঙ্গলের রহস্য বের করবে, তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। চিনের মঙ্গল-অভিযানের প্রসঙ্গে হার্ভার্ডের স্মিথসোনিয়ান সেন্টারের মহাকাশবিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডাওয়েল বলেছেন, “চিনের প্রথম চেষ্টা। দেখা যাক কী হয়! চিন যা করবে তা বহু আগেই আমেরিকা করে দেখিয়ে দিয়েছে। সেই ২০১২ সাল থেকেই মঙ্গলে রয়েছে নাসার রোভার মিস কিউরিওসিটি। এ বছরে কিউরিওসিটির পরবর্তী প্রজন্ম আরও উন্নত পারসিভিয়ারেন্সকে মঙ্গলে পাঠানো হচ্ছে।” এবারের মিশনে পারসিভিয়ারেন্স রোভারের কাজ হবে মঙ্গলের মাটিতে প্রাণের চিহ্ন খুঁজে বার করা।  মঙ্গলের আবহাওয়া, সেখানে মাটির প্রকৃতি পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করা।

-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক