কানাডার উইনিপেগ শহরে বৃহস্পতিবার দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। আরোরা বা মেরুজ্যোতি দেখে ফেরার পথে আরবর্গ শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে হাইওয়ে ৭ সড়কে ভোররাতে তারা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
তারা ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবায় পড়াশোনা করতেন।
নিহত তিন বাংলাদেশি তরুণ বন্ধু ছিলেন। প্রায়ই তারা একসঙ্গে থাকতেন। তিন জনই ঢাকার ছেলে: আল নুমান আদিত্ত, আরানুর আজাদ চৌধুরী, রিসুল বাধন।
কানাডার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এখন স্বজন হারানোর হাহাকার চলছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, এই তিনজন খুব পরিচিত মুখ। প্রতিটি অনুষ্ঠানে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকে।
যে গাড়িতে করে তারা ফিরছিলেন তার চালক ছিলেন ৫৩ বছর বয়সী এক নারী। তিনি আহত হলেও তেমন গুরুতর কিছু হয়নি।
ফারদিন জারিফ নামের এক বাংলাদেশি সিবিসি নিউজের সঙ্গে আলাপে তিনজনকে এভাবে পরিচয় করিয়েছেন, ‘আমি যেসব ভালো মানুষের সঙ্গে জীবনে মিশেছি, তাদের মধ্যে ওরা তিনজন অন্যতম।’
তিনজনের গাড়ি ছাড়া আরও তিনটি গাড়ি ছিল এই ট্রিপে। ফেরার পথে দুটি গাড়ি আগে ছিল। তিন বন্ধুর গাড়ি এবং চতুর্থটি গ্যাস নিতে পথে দেরি করে। গ্যাস নিয়ে তারা আবার রওনা দিলেও চতুর্থ গাড়িটি সকালের নাশতার পরিকল্পনা করে ।
চতুর্থ গাড়িটি আবার যাত্রা শুরু করলে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আরেকটি গাড়ি উল্টে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত শিক্ষার্থীদের দুজনের বয়স ২৩ বছর। অপর শিক্ষার্থীর বয়স জানা যায়নি।
বছরের এই সময়ে আরোরা বা মেরুজ্যোতির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকেরা কানাডায় ছুটে যান।
এই দিনগুলোতে সৌরঝড়ের ফলে সূর্যের অভ্যন্তরের চার্জিত কণা বা প্লাজমা সৌরজগতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবীতে এসব কণা পৌঁছালে সেগুলো ভূ-ভাগের চৌম্বকক্ষেত্র ও পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের প্রভাবে একধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। যাকে মেরুজ্যোতি বলা হয়।
এটি যারা দেখতে যান তাদের সতর্ক করেছেন কানাডার পরিবেশবিদ ক্রিস ব্রোগডেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘হাইওয়েতে রাতে যারা গাড়ি চালান, তারা দয়া করে অতিরিক্ত সতর্ক থাকবেন। এই তিন বন্ধু আরোরা দেখতে গিয়েছিলেন। আর কখনো তাদের বাড়ি ফেরা হবে না।’
-সিবিসি নিউজ