Home আন্তর্জাতিক মঙ্গলে রোভার ছুটছে এ মাথা থেকে ও মাথা

মঙ্গলে রোভার ছুটছে এ মাথা থেকে ও মাথা

ছ’টা চাকা নিয়ে মঙ্গলের লাল মাটিতে তরতরিয়ে ছুটে চলেছে নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার। জেজেরো ক্রেটারে নামার পর থেকে তার আর এক মুহূর্ত বিশ্রামের সময় নেই। এই জেরেরো ক্রেটারেই কোটি কোটি বছর আগে বিলীন হয়ে গেছে বড় বড় নদী। মৃত নদীর ফসিল আর গভীর গিরিখাতের চিহ্ন বইছে এই গহ্বর, মঙ্গলের দুর্গমতম স্থানগুলির মধ্যে একটি। সেখানকারই কয়েকটি ছবি তুলে পৃথিবীর গ্রাউন্ড স্টেশনে পাঠিয়ে দিয়েছে নাসার রোভার।

স্কাইক্রেন ম্যানুভারে ছয় ইঞ্জিনের জেটপ্যাক আলতো করে রোভারকে নামিয়ে দিয়েছে লাল মাটিতে। সাত মিনিটের সেই অবতরণের আতঙ্ক কাটিয়ে গতি কমিয়ে নির্বিঘ্নেই মঙ্গলের মাটিতে ল্যান্ড করেছে রোভার। পারসিভিয়ারেন্সের চিফ ইঞ্জিনিয়ার অ্যাডাম স্টেলজ়নার বলেছেন, ২ মিটার অর্থাৎ প্রায় ৬ ফুট উচ্চতা থেকে নামার সময় ফটাফট মঙ্গলের গিরিখাত ও গহ্বরের কয়েকটা ছবি তুলে নেয় রোভার।

এবারে নাসার মঙ্গলযানের আরও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে তা হল ‘ইনজেনুইটি মার্স হেলিকপ্টার’ । চার কার্বন-ফাইবার ব্লেড যুক্ত থাকবে দুটি রোটরের সঙ্গে, ঘুড়বে ২৪০০ আরপিএম-এ। রোভারের পেটের সঙ্গে জোড়া থাকবে এই হেলিকপ্টার। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর থেকে অনেক পাতলা। তাই রোভারকে একজায়গা থেকে অন্যজায়গায় খুব দ্রুত পৌঁছে দেবে এই হেলিকপ্টার।

এটা অনেকটা পৃথিবীর ড্রোনের মতো। রোভার যখন অনেক স্যাম্পেল জোগাড় করে একজায়গা থেকে অন্যজায়গায় যেতে চাইবে তখন এই হেলিকপ্টার সাহায্য করবে। কারণ মঙ্গলের মাটি তো পৃথিবীর মতো নয়, এখানে রুক্ষ পাহাড়ি উপত্যকা, গিরিখাত রয়েছে। সেইসব পেরিয়ে রোভারকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই এয়ারক্রাফ্ট।

Image result for Mars Rover Beams Back Spectacular New Images

অ্যাডাম স্টেলজ়নার বলছেন, রোভার এখন যে জায়গায় রয়েছে তার নাম জেজ়েরো ক্রেটার, ১৮.৩৮ ডিগ্রি উত্তর ও ৭৭.৫৮ ডিগ্রি পূর্বে অবস্থিত এই ক্রেটার। মনে করা হয় এই ক্রেটারের বয়স প্রায় ৩৫০ কোটি বছর। ক্রেটারের চারপাশের পাথুরে জমি, গিরিখাতের ছবি পাঠিয়েছে রোভার। ৪৯ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই গহ্বর বিরাট একটা বাটির মতো। এই ক্রেটারকে বলা হয় মঙ্গলের ডেল্টা। মনে করা হয় এখানে একসময় বড় বড় নদী বয়ে যেত। ক্রেটারের মাটিতেও জলের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলে। আর যেখানে জল, সেখানে প্রাণের জন্ম হওয়া স্বাভাবিক। কোটি কোটি বছর আগে যখন নদীরা বিলুপ্ত হয়ে যায়নি, তখন এখানে আনুবীক্ষণিক জীবদের জন্ম হয়েছিল বলেই মনে করা হয়। পারসিভিয়ারেন্স এই ক্রেটারে ঘুরে ঘুরেই সেই হারিয়ে যাওয়া প্রাণের খোঁজ করবে। আগামী দিনে মঙ্গলের শব্দ মাইক্রোফোনে রেকর্ড করেও পৃথিবীতে পাঠাবে রোভার। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই সে অসম্ভব কাজ করে ফেলবে বলেই মনে করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।

-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক