চলতি বছরেই রেলওয়েতে ১০ থেকে ১৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন। সোমবার বিকেলে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন উঁচু ও বর্ধিত প্লাটফর্মের শুভ উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি বলেন, এই বছরের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রেলওয়েতে নিয়োগ দেয়া হবে। ফলে রেলওয়েতে যে ঘাটতি আছে তা পূরণ হবে। পঞ্চগড় থেকে খুলনা ট্রেন চলাচল করবে, এটার ঘোষণা দেয়া লাগবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমাদের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল ৩ হাজার কিলোমিটার আর সড়কপথ ছিল সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার।
আজকে সড়ক পথ বর্ধিত হয়ে প্রায় ৪০ হাজার কিলোমিটার হয়েছে, তবে রেলপথ আরও ২০০ কিলোমিটার কমে হয়েছে ২৮শ’কিলোমিটার। তাহলে রেল কত অবহেলিত! ৭২-৭৩ সালে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল ৬৮ হাজার, যেটি এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৫ হাজার। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় শ্রমিক ছিল ১০ হাজার যেটি এখন কমে এসে হয়েছে মাত্র ১৪শ’।
রেলপথমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন পর্যটন নগরী কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ করার। আমরা আশা করছি, আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারিত হবে এবং দিনাজপুর থেকে সরাসরি কক্সবাজারে যাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, পঞ্চগড় থেকে ভারতের শিলিগুড়ি পর্যন্ত রেলওয়ের মাধ্যমে মানুষ যাতায়াত করতে পারবে। ইতোমধ্যেই সেই সমীক্ষার কাজ চলছে।
তিনি বলেন, রেলওয়েকে পাবলিক করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিলো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছেন। রেলওয়েকে ঢেলে সাজানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য যমুনা সেতু পরিকল্পনা করা হয়েছিল তবে তাতে রেল ছিল না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর সেই ডিজাইন পরিবর্তন করে এটিতে রেলওয়ে চলাচল যুক্ত করেছেন। এখন তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, আরেকটি রেলওয়ে সেতু নির্মাণের।
তিনি আরও বলেন, মোংলা পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছরের জুলাই মাসের মধ্যে মোংলা পর্যন্ত রেল চালু হবে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে রেল চালু হবে। যেদিন পদ্মা সেতু সড়কপথের জন্য খুলে দেওয়া হবে সেই দিনই যেন আপাতত ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেল চালু করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, রেল আপনাদের সম্পদ এবং রেল ভ্রমণ নিরাপদ ও সাশ্রয়ী। রেল আগের চেয়ে ভালো চলছে এটার কৃতিত্ব আপনাদের। আগে রেলের টিকিট কালোবাজারি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যেত। এখনও যদি টিকিট কালোবাজারি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তা দূর করার ব্যবস্থা করা হবে। যদি রেলের কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী টিকিট কলোবাজারির সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী (পশ্চিম) জোনের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা, মহাপরিচালক ডিএন মজুমদার, দিনাজপুরের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক