*ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের আশংকা
*যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে: পরিবেশ অধিদপ্তর
*বর্জ্য পোড়ানোর চিমনি আছে: রেজাউল করিম আজাদ
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: আইন অনুযায়ী হাসপাতালগুলোতে বিশেষ উপায়ে চিকিৎসা বর্জ্য পুড়িয়ে ধ্বংস করার কথা থাকলেও তা মানছে না চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল।
সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের মাঝখানের খোলা জায়গায় চিকিৎসা বর্জ্য পুড়িয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। যেখানে রোগী ও ডাক্তার নার্সদের ব্যবহার করা মাস্ক-গ্লাভস, পিপিই ও অন্যান্য মেডিকেল বর্জ্য রয়েছে। হাসপাতালের মাঝখানে চিকিৎসা বর্জ্য পুড়িয়ে একদিকে পরিবেশের ক্ষতি করা হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতির কারণ হচ্ছে হাসপাতালের রোগী, ডাক্তার নার্সদের জন্যও ।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের এসব বর্জ্য থেকে ছড়ানো জীবাণু জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করে চলেছে।
২০০৮ সালে পাস করা আইন অনুযায়ী সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকার কথা।
সেইভ দ্যা নেচার অফ বাংলাদেশের সভাপতি পরিবেশবিদ মোয়াজ্জেম রিয়াদ বলেন, হাসপাতালে মাঝখানে বর্জ্য পোড়ানো খুব ভয়াবহ। একদিকে যেমন আইন অমান্য হচ্ছে, আরেকদিকে পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের সুনির্দিষ্ট বিধিমালা আছে। যেখানে কালার কোড অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য পৃথকীকরণ, প্যাকেটজাত, পরিবহন, মজুদ ও বিনষ্টকরণের নিয়ম বলা আছে। কিন্তু সেই বিধিমালা কতটা মানা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ২০০৮ সালের চিকিৎসা বর্জ্য নিষ্কাসনসংক্রান্ত আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন। আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হবে মেডিকেল ইনসিনেরেটর ও অটোক্লেভসহ আধুনিক ব্যবস্থা। তরল বর্জ্য নিষ্কাসনের সুব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী-কর্মকর্তার প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন আব্দুল হালিম বলেন, রোগীদের ব্যবহৃত ময়লা আবর্জনা হাসপাতাল এলাকার মধ্যে ধ্বংস হচ্ছে। তিনদিন ধরে হাসপাতালের রোগীদের ব্যবহৃত জীবাণুযুক্ত ময়লা আবর্জনা পোড়ানোর কারণে রোগী ও সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া বাচ্চারা মারাত্মক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। রোগীরা হাসপাতালে রোগমুক্ত হওয়ার জন্য আসলেও কর্তৃপক্ষের এসব আগ্রাসী মনোভাবের কারণে আরো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।
বর্জ্য পোড়ানোর ব্যাপারে মা ও শিশু হাসপাতালের ট্রেজারার রেজাউল করিম আজাদ-এর কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘বর্জ্য পোড়ানোর জন্য আমাদের হাসপাতালে আলাদা চিমনি আছে। আমরা সেখানেই বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলি। আমাদের নিজস্ব কোয়ান্টাম আছে, যে সব মালামাল অকেজো হয়েছে তা কিছু বিক্রয় এবং কিছু পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। তাছাড়া বর্জ্য পোড়ানোর এখনও সিদ্ধান্ত হয়নাই। আমরা প্রতি ৬ মাস অন্তর অন্তর হাসপাতালের সকল বর্জ্য অপসারণ করি।’ হাসপাতলের মাঝখানে উন্মুক্ত স্থানে কেন বর্জ্য পোড়ানো হচ্ছে এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক নুরুল্লাহ নুরীর কাছে জানতে চাইলে বলেন, মেডিকেলের চিকিৎসা বর্জ্য পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমরা মা ও শিশু হাসপাতাল কে এই ব্যাপারে নোটিশ দিয়ে, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করব।