বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
মিয়ানমারে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সরকারি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে। এমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের একদিন পর আবার বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছে আন্দোলনকারীরা।
সোমবার (১ মার্চ) ফের রাস্তায় নেমে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ দেখানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই সংবাদ জানিয়েছে।
রবিবারের ওই সহিংসতা ও রক্তপাতের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধি। মিয়ানমারে বিক্ষোভ দমনে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এদিন যে পদক্ষেপ নেয়, তাকে ‘ঘৃণ্য সহিংসতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতায় পুনর্বহালের দাবিতে রবিবার আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ শুরু করার পরপরই দেশজুড়ে তাদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গনের বিভিন্ন অংশসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে কাঁদানে গ্যাস, স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ, কিন্তু তাতেও বিক্ষোভকারীদের হটাতে না পেরে সরাসরি গুলি চালালে অভ্যুত্থানের পর থেকে সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন পার করে মিয়ানমার।
সোমবারও ইয়াঙ্গুনের প্রতিবাদি হট স্পটগুলিতে জলকামান এবং সামরিক যানবাহনসহ পুলিশকে একত্রিত হতে দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীরা সু চির ছবি ধারণ করে সামরিক একনায়কতন্ত্র চাই না গণতন্ত্র চাই এমন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে শান রাজ্যের লাসিওর রাস্তায় জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের একটি ছোট ভিড় দেখানো হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে দিতে পুলিশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা সেনাবাহিনীকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অবিলম্বে বলপ্রয়োগ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যাঁরা বিক্ষোভ করছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছে।
এদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতিসংঘকে আহ্বান জানানোর একদিন পরই দেশটির রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুনকে বরখাস্ত করার কথা জানিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার।
অভ্যুত্থানের এক মাস হয়ে গেছে। সেনাবাহিনী বিক্ষোভ দমনে রবিবার আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে । আমরা আজ আবারও বেরিয়ে এসেছি, ফেসবুক পোস্টে দেশটির অ্যাক্টিভিস্ট আই থিনজার মাং এ কথা জানান।
মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ কর্মকর্তা টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, এটা স্পষ্ট যে জান্তা সরকার বিক্ষোভ দমনে হামলা অব্যাহত রাখবে, তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।