বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ও বেসরকারি খাতের আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি থাকায় কোন ধরণের লভ্যাংশ দিতে পারবে না।
গেল বছরের ডিসেম্বর শেষে ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় লভ্যাংশ দিতে পারবে না ব্যাংক দুইটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে মূলধন সংরক্ষণের শর্ত পূরণ করতে পারেনি ১০টি ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ৫টি, বেসরকারি ৩টি ও বিশেষায়িত ২টি ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো- রূপালী, আইসিবি ইসলামিক, অগ্রণী, বেসিক, জনতা, সোনালী, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। এসব ব্যাংকের সম্মিলিত মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা।
গেল বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ১৯ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ পরবর্তী তিন মাসে এ ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ১২ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ২৩ হাজার ৬১২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের মধ্যে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি মূলধন ঘাটতি রয়েছে। ব্যাংকটিতে ঘাটতির পরিমাণ এক হাজার ৬২২ কোটি টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি রয়েছে ৬৭১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তাই নিয়ম অনুযায়ী আইসিবি ইসলামিক ও রূপালী ব্যাংক কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের ঘাটতি পাঁচ হাজার ৪৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, সোনালী ব্যাংকের তিন হাজার ৬৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের তিন হাজার দুই কোটি ২০ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংকের এক হাজার ৪৯২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঘাটতি ১০ হাজার ৮১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) এক হাজার ৪৫৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আর বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি এক হাজার ৩৫ কোটি টাকা এবং পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স) ৩১০ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং রীতি ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী, ঝুঁকি বিবেচনায় ব্যাংকগুলোকে নিয়মিত মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বর্তমান নিয়মে ব্যাংকগুলোকে ৪০০ কোটি টাকা অথবা ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশের মধ্যে যা বেশি সেই পরিমাণ অর্থ ন্যূনতম মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়।
রীতি অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক মূলধনে ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না। তবে কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি নিয়ে বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারে।