বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কলকাতা: আজ রবিবার প্রথম বার পশ্চিমবঙ্গে ভোট প্রচারে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তাঁর সভা । সেখানে তিনি বললেন:
- রাজনৈতিক জীবনে কত শত সভা করেছি। এই সভা অভূতপূর্ব। হেলিকপ্টার থেকে দেখছিলাম ময়দানে তো জায়গা নেইই, রাস্তাতেও কালো মাথার স্রোত বইছে।
- আমার সৌভাগ্য এই ঐতিহাসিক ব্রিগেড গ্রাউন্ডে বক্তৃতা দিতে পারছি। এই ব্রিগেডের কাছেই একদিকে স্বামী বিবেকানন্দর বাড়ি, অন্যদিকে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের বাড়ি, ঋষির অরবিন্দর বাড়ি, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মভিটে।
- এই ব্রিগেড বাংলায় উন্নয়নে বাধা দেওয়ারও সাক্ষী। বাংলাকে চব্বিশ ঘন্টা হরতাল আর বন্ধে বেঁধে রাখার নীতি কথাও এখান থেকে বলা হয়েছে।
- বাংলা চায় উন্নতি, বাংলা চায় শান্তি, বাংলা চায় প্রগতিশীল বাংলা, বাংলা চায় সোনার বাংলা।
- আমি দেখতে পাছি এ বার বিধানসভা ভোটে একদিকে তৃণমূল রয়েছে। বাম,কংগ্রেস রয়েছে। তাদের উন্নয়ন-বিরোধী নীতি রয়েছে। অন্যদিকে খোদ জনতা দাঁড়িয়ে রয়েছে।
- আজ আমাদের মধ্যে বাংলার ছেলে মিঠুন চক্রবর্তীও রয়েছে। ওঁর জীবনগাথায় সংগ্রামের কথা লেখা রয়েছে। লোকনাথ বাবার আশীর্বাদ রয়েছে তাঁর সঙ্গে।
- এই ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে আমি বাংলার মানুষকে আসল পরিবর্তনের আশ্বাস দিতে চাই। বাংলার পুনর্নিমাণের, বাংলার সংস্কৃতি রক্ষা, উন্নয়নের, বিনিয়োগ বাড়ানোর, কর্মসংস্থানের। এখানকার ছেলেমেয়েদের, শিল্পের জন্য, বাংলার জন্য ২৪ ঘন্টা লড়াই করব। প্রতি মুহূর্ত আপনাদের জন্য বাঁচব। শুধু ভোট নয়, প্রতিনিয়ম আপনাদের মন জয় করে চলতে চাই। তা করতে চাই প্রেম, সমর্পণ দিয়ে। বাংলার মানুষের হিত বিজেপির কাছে সবচেয়ে জরুরি হবে।
- বাংলায় আসন পরিবর্তন আনা বিজেপির পরিশ্রমের আধার হবে। আসল পরিবর্তনের মানে, এমন বাংলা যেখানে যুবকদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়া যাবে, এমন বাংলা যেখানে মানুষকে রাজ্য ছেড়ে যেতে হবে না। আসল পরিবর্তন মানে এমন বাংলা যেখানে শিল্প বাণিজ্যের উন্নতি হবে, বিনিয়োগ আসবে, এমন বাংলা যেখানে একুশ শতকের আধুনিক পরিকাঠামো হবে, যেখানে গরিবদের অগ্রসর হওয়ার সুযোগ থাকবে, যেখানে সব শ্রেণির উন্নয়নে সমান ভাগিদারী থাকবে।
- উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ, পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে কোনও পার্থক্য করা হবে না। সবাই গুরুত্ব পাবে। সবার কল্যাণ করাই প্রশাসনের মন্ত্র হবে। কারও তুষ্টিকরণ হবে না।
- স্বাধীনতার পর গত ৭৫ বছরে বাংলা থেকে যা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা আমার থেকে আপনারা ভাল জানেন। বাংলা থেকে যা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা ফেরত দেব। আমার কথা লিখে রাখুন।
- দেশের মতো আগামী ২৫ বছর বাংলার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণেই এই বিধানসভা ভোটের মাহাত্ম্য। কারণ, আগামী পাঁচ বছরে সেই বৃহত্তর উন্নয়নের আধার তৈরি হবে। যাতে ২০৪৭ সালে দেশ যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ পালন করবে, তখন যাতে বাংলা দেশের পয়লা নম্বর স্থানে থাকে।
- বাংলার মাটিতে ওই সব জিনিস রয়েছে যা জীবনকে মসৃণ করতে পারে। বন্দর, পাহাড়, পর্যটন কী নেই!
- কলকাতাকে সিটি অব ফিউচার কেন বানানো যাবে না। কদিন আগে একটা সমীক্ষা হয়েছে। তাতে বাংলার মানুষ বলেছে, কলকাতাকে তারা ভবিষ্যতের শহর হিসাবে গড়ে উঠতে দেখতে চায়।
- বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলায় স্মার্ট সিটি হবে। সেখানে পড়াই কামাই এবং মানুষের চিকিৎসার জন্য দাওয়াইয়ের ব্যবস্থা থাকবে। পরিকাঠামো উন্নতি হবে। গ্রাম ও শহরের প্রশাসনিক ব্যবস্থাতেও সংস্কার করা হবে।
- বাংলায় পঞ্চায়েত ও পুর-ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক কাঠামোকে তছনছ করা হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে তা ঠিক করবে। পুলিশ ব্যবস্থায় মানুষের আস্থা ফেরাবে।
- বাংলায় চাকরির পরীক্ষা স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে। স্কিল ডেভেলপমেন্ট স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে।
- কারিগরী, চিকিৎসার মতো বিষয়ে পঠনপাঠন যাতে বাংলায় হয়, তার ব্যবস্থাও করা হবে। ইংরেজি না জানলেও গরিবের ছেলেমেয়েরা যাতে ডাক্তারি পড়তে পারে, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারে, সেই ব্যবস্থাও আমরা করব।
- আমরা বাংলার রাজনীতিকে উন্নয়ন কেন্দ্রিক করতে চাইছি। অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। আর সময় নষ্ট যেন না হয়।
- বাংলায় ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি শুরু করেছিল বামেরা। তারা স্লোগান তুলেছিল, বলত কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও। এমন স্লোগান দিয়ে ওরা ক্ষমতায় এসেছিল। প্রায় তিন দশক ক্ষমতায় ছিল। আমি জানতে চাই, আজ সেই কালো হাত কীভাবে গোরা হয়ে গেল! যে হাতকে বামপন্থীরা কালো বলত তা সাদা হয়ে গেল কী করে? যে হাত ভাঙার কথা বলেছিল, এখন সেই হাতের আশীর্বাদ চাইছে।
- গত দশ বছর ধরে তৃণমূল সরকার এখানে ক্ষমতায় ছিল। সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা কি পূরণ হয়েছে? কৃষক, শ্রমিক, গরিবদের জীবনে কোনও পরিবর্তন হয়েছে? গরিব যাতে আরও গরিব হয় সেই ব্যবস্থা করেছে।
- বাংলার স্কুলে, হাসপাতালে, শিল্পে কোনও পরিবর্তন হয়েছে? খুনখারাপির রাজনীতিতে কোনও পরিবর্তন এসেছে কি! আজ বাংলায় মা মাটি মানুষের কী অবস্থা হচ্ছে সবাই জানে।
- আশি বছরের বুড়ি মাকে যে ভাবে মারা হয়েছে, তাতে এঁদের ক্রূর চেহারা গোটা দেশ দেখতে পেয়েছে।