বাংলাদেশে পিপিপি প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করতে সৌদি বিনিয়োগকারীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অথোরিটি অব বাংলাদেশ এবং সংশ্লিষ্ট সৌদি কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য ঢাকা রিয়াদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম রবিবার রিয়াদে সৌদি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবাইয়ের সঙ্গে তার অফিসে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন।
জবাবে সৌদি প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা পিপিপি সম্পর্কিত এই সমঝোতা স্মারক ইস্যুটি নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন এবং আশা করছেন যে, সৌদি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের মতো সম্ভাবনাময় অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করবে।
শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশিসহ সকল বৈধ-অবৈধ বিদেশিদের বিনামূল্যে কোভিড-১৯ চিকিৎসা-সেবা ও টিকা দেওয়ায় সৌদি বাদশাহ্ ও যুবরাজের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আলমের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সৌদি প্রতিমন্ত্রী বৈধ কাগজ-বিহীন বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য-সেবা প্রদান ও কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন।
প্রতিমন্ত্রী ঢাকায় সৌদি দূতাবাসে সাংস্কৃতিক অ্যাটাশে পুনঃনিয়োগ দেওয়ার অনুরোধ জানান যাতে করে সেবা-প্রত্যাশীদের কাগজপত্র সত্যায়নের জন্য নয়াদিল্লিতে পাঠাতে না হয়। সৌদি পক্ষ বিষয়টি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করেছে।
উভয় প্রতিমন্ত্রী অপেক্ষমাণ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষর ত্বরান্বিত করতে এবং প্রথম ফরেন অফিস কনসালটেশন আয়োজনে সম্মত হন সেখানে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিস্তারিত দিকগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
আলম বলেন, উভয় দেশের দূরদর্শী নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
এই পয়েন্ট থেকে আরও অগ্রসর হয়ে তিনি অভিন্ন স্বার্থ, লক্ষ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সহযোগিতার আরও নতুন পথ খোঁজার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজতে নিয়মিত বিজনেস টু বিজনেস ডায়ালগের ওপরও জোর দেন।
আলম সম্প্রতি হুতি বিদ্রোহীদের কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা করে সৌদি আরবের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। তিনি সৌদি আরবের পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
আদেল আল-জুবেইর ইয়েমেন ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করেন। সৌদি প্রতিমন্ত্রী স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বিগত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতির লক্ষণীয় টেকসই উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম-আয়ের দেশের স্বীকৃতি প্রদানে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এই সাফল্যেরই স্বীকৃতি।
দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সোনার বাংলা গড়ার ভিত প্রস্তুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।