বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: বিশ্বের ব্যস্ততম নৌপথগুলোর অন্যতম সুয়েজ খাল বন্ধের ফলে প্রতি ঘণ্টায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের।
এই পরিসংখ্যান দিয়ে শিপিং সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্বের মোট বাণিজ্যের ১২ শতাংশ হয় এই পথেই। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭ টা ৪০ মিনিটে পানামা পতাকাবাহী একটি জাহাজ আড়াআড়ি আটকে যাওয়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দু’দিনে অনেক জাহাজ সুয়েজ খাল পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুয়েজ খাল লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযুক্ত করে। এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম নৌ পথ এটা। তাই সুয়েজ খাল যথেষ্ট ব্যস্ত পথ। তা বন্ধ থাকলে যে এশিয়া-ইউরোপের জলপথে পণ্য পরিবহনে বড় প্রভাব পড়বে তা বলাই বাহুল্য। ক্ষতির পরিমাণ যে কতটা তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পরিসংখ্যানে। খালটিতে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হওয়ায় প্রতি ঘণ্টায় বিশ্ববাণিজ্যে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে। জানা গিয়েছে,
মঙ্গলবার সকালে সুয়েজ খাল দিয়ে উত্তরদিকে ভূমধ্যসাগরের দিকে যাচ্ছিল বিশাল জাহাজ এভার গিভেন। এদিকে সুয়েজ খালের কোনও অংশ প্রশস্ত আবার কোনও অংশ সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। কখনও কখনও তা প্রায় ৬০০ ফুটের কাছাকাছি। সেই পথ দিয়ে জাহাজ এগিয়ে চলা রীতিমতো কঠিন ব্যাপার। পণ্যবাহী জাহাজটি বইতে থাকা তীব্র হাওয়ায় হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরে যেতে শুরু করে। শেষপর্যন্ত জাহাজের গতিপথ বিঘ্নিত হয়। আড়াআড়িভাবে সুয়েজ খাল আটকে দাঁড়িয়ে পড়ে জাহাজটি। এদিকে ব্যস্ত খাল এভাবে অবরুদ্ধ হওয়ায় জলপথে তীব্র জাহাজজটের সৃষ্টি হয়েছে। পরপর দাঁড়িয়ে গিয়েছে আরও বহু জাহাজ। জাহাজটিকে সরানোর চেষ্টায় নেমেছে মিশরের প্রশাসন।
সূত্রের খবর, সুয়েজ খালে আটকে থাকা প্রায় ৪০০ মিটার লম্বা জাহাজটি পানামায় রেজিস্ট্রি করা। তাইওয়ানের এভারগ্রিন মেরিন করপোরেশন কনটেইনার জাহাজটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, হঠাৎ প্রবল বাতাস আর ধূলিঝড়ে জাহাজটির গতিপথ বদলে যায়। এটির নিচের অংশ আড়াআড়িভাবে তীরের মাটিতে আটকে যায়।
চিন থেকে মালবাহী কন্টেইনার নিয়ে নেদারল্যান্ডসের বন্দর রোটারড্যাম যাচ্ছিল জাহাজটি। আটকে পড়া জাহাজটিকে সরাতে বেশ কয়েকটি টাগ বোট নামানো হয়েছে। সঙ্গে খালের দুই তীরে এক্সাভেটর দিয়ে মাটি কাটার কাজ চলছে। বিশাল জাহাজের সামনে ক্ষুদ্র এক্সাভেটরের ছবিটি নিয়েও কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় মজা করছেন। প্রায় দুই লাখ কুড়ি হাজার টন মালবাহী জাহাজের সামনে এক্সকাভেটরটি দৃশ্যতই ছোট লাগছে।
সুয়েজ খাল দিয়ে জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে। চলমান অবস্থায় অবস্থায় বিকল্প পথে জাহাজ যাতায়াত শুরু হয়েছে। তবে, অত্যন্ত ব্যয় বহুল।