বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: দেশে নিত্যপণ্যের মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে এবং দাম বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (১১ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এর ‘পবিত্র রমজান মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ কথা জানানা ব্যবসায়ীরা।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট সচেতনভাবে কাজ করছে । রোজায় অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন সুযোগ নিতে না পারে, সে ব্যাপারে তিনি বিএসটিআইসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, রোজা এলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয় এবং অনেক সময় পণ্যের সাপ্লাই ও চাহিদার সমন্বয় থাকে না। তিনি ব্যবসায়ী সমাজকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানান এবং ব্যবসায়ীদের সজাগ থাকতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির কারণে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে। সরকার আগামী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সবাইকে লকডাউন মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবের পাশাপাশি অতিরিক্ত মজুদকরণের মাধ্যমে বাজারে পণ্যদ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, অপর্যাপ্ত ও সমন্বয়হীন বাজার মনিটরিং, পরিবহনখাতে চাঁদাবাজি এবং অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয় প্রভৃতি কারণে প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসের পূর্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়। করোনা মহামারীর ফলে গত বছরের শেষ নয় মাসে আয় কমে যাওয়া ও কর্মচ্যুতির ফলে অধিকাংশ মানুষ ঋণ করে এবং সঞ্চয় ভেঙে জীবন নির্বাহ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে দরিদ্ররা কষ্টে পড়বে এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে।’
তিনি আসন্ন রমজানে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে রমজানে আমদানিনির্ভর ভোগ্যপণ্য বন্দর থেকে কাস্টমস হাউজ ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সহায়তায় দ্রুত খালাসকরণ, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি ও যানজট নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, দেশের সব বাজারে দক্ষ ও পর্যাপ্ত বাজার মনিটরিং-এর মাধ্যমে নিয়মিত ন্যায্যমূল্য তালিকা হালনাগাদ করা এবং মূল্য তালিকা কার্যকর করা, অতি দরিদ্রদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নগদ অর্থ প্রদান প্রভৃতির প্রস্তাব করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, এটি একটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, যার মাধ্যমে জনগণকে আসন্ন রমজান মাসে সুফল দেয়া যাবে। তিনি জানান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এরইমধ্যে ৯ সদস্যবিশিষ্ট ‘বাজার মূল্য পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ’ বিষয়ক স্থায়ী কমিটি গঠন করেছে। শিগগিরই তাদের কাজ শুরু করবেন। এর ফলে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হবে। তিনি লকডাউনের সময়ে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান এবং বলেন, এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। মেয়র বলেন, ব্যবসায়ী সমাজের মতামত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে রমজান মাসে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর হাসপাতালের মাধ্যমে জনগণকে সিটি করপোরেশন থেকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে এবং সামনের দিনগুলোতে এ সেবা আরো বৃদ্ধি করা হবে।
মুক্ত আলোচনায় ডিএনসিসি কাঁচা ও সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দীন মোহাম্মদ, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এসএম নাজির হোসেন, বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশন সভাপতি কাজী ইনাম আহমেদ প্রমুখ ওয়েবিনারে যুক্ত ছিলেন।