মিতুকে খুন করাতে ৩ লাখ টাকা দিয়েছিলেন
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় দায়ের করা নতুন মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম তৃতীয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই বাবুল আক্তারকে আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন দুপুরে পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মিতু হত্যার ঘটনায় ২০১৬ সালে বাবুল আক্তারের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেবে পিবিআই।
তিনি বলেন, ‘মিতু হত্যার সঙ্গে স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’
এর আগে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় পিবিআই মেট্রো অঞ্চলের কার্যালয়ে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় তিন লাখ টাকা দিয়েছিলেন বাবুল আক্তার। আদালতে দুই সাক্ষীর জবানবন্দি ও পিবিআইয়ের তদন্তে এ তথ্য উঠে আসে। এ ছাড়া পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন ও নতুন দায়ের করা মামলায় এই লেনদেনের উল্লেখ আছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, স্ত্রী হত্যার তিন দিন পর বাবুল আক্তার তার ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল হককে বলেন, তার লাভের অংশ থেকে তাকে যেন তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়। সাইফুল বিকাশের মাধ্যমে ওই টাকা গাজী আল মামুনকে পাঠান। গাজী আল মামুন ওই টাকা মুসা, ওয়াসিমসহ আসামিদের ভাগ করে দেন। তবে কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। এ ঘটনায় তার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মিতুর বাবা এ হত্যায় বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তোলেন। ২০১৭ সালের ২৪ জুন রাতে বাবুল আক্তারকে ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুরবাড়ি থেকে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
একপর্যায়ে ৬ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ১ নভেম্বর ঢাকার বেসরকারি আদ-দ্বীন হাসপাতালে সহযোগী পরিচালক হিসেবে বাবুল আক্তার যোগদান করেন।