বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: নিষিদ্ধ অ্যাপে তরুণীদের সঙ্গে অনলাইনে আড্ডার লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে আর্থ আত্মসাত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার। তারা হলেন নিধুরাম দাস (২৭) ও মো. ফরিদ উদ্দিন (৪০)।
বুধবার সিলেটের গোয়াইনঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছে থেকে লেনদেনে ব্যবহার করা ব্যাংক চেক বই, ডেবিট কার্ড, বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানায় সিআইডি।
সিআইডির ভাষ্য, তাদের প্রধান টার্গেট যুবক এবং বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা। আড্ডায় ঢুকতে বিশেষ একটি অ্যাপ ব্যবহার করতে হতো। অনলাইনে এভাবে ফাঁদে ফেলে গত এক বছরে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ‘স্ট্রিমকার’ নামের অ্যাপটিতে সংযুক্ত হতেন ব্যবহারকারীরা। এই অ্যাপে দুই ধরনের আইডি রয়েছে। ব্যবহারকারীর আইডি ও হোস্ট আইডি। হোস্ট আইডি ব্যবহার করে বিশেষ কিছু চক্র অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তরুণীদের দিয়ে হোস্টিং করিয়ে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করা হতো। তাদের টার্গেট মূলত যুবক এবং বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা। লাইভ স্ট্রিমিংয়ে আড্ডা দেওয়ার প্রলোভনে অ্যাপে ঢুকেন ব্যবহারকারীরা। এ জন্য বিনস নামের ভার্চুয়াল মুদ্রা কিনতে হয় তাদের। ওই মুদ্রা উপহার হিসেবে দিয়ে আড্ডায় যুক্ত হতে হতো ব্যবহারকারীদের।
কামরুল আহসান আরো বলেন, বিশেষ ওই অ্যাপটির অনেক এজেন্ট রয়েছে বাংলাদেশ। তারাই ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনাবেচা করেন। লক্ষাধিক বাংলাদেশি ব্যবহারকারী অনলাইন ব্যাংকিং, হুন্ডি, নেটেলার স্ক্রিল ও বিদেশি একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ডিজিটাল মুদ্রা কিনছে। এর মাধ্যমে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আমরা একটি মামলা করব। এ ছাড়া অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পেলে তাদের আইনের আওতায় এনে গ্রেপ্তার করা হবে। গ্রেপ্তার নিধু রাম দাসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এবং বিকাশ অ্যাকাউন্টে গত এক বছরে ১০ কোটিরও বেশি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার ফরিদ উদ্দিনের ব্যাংক একাউন্ট এবং বিকাশ একাউন্ট থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে সিআইডি কাজ করছে। এ ছাড়া চক্রের অন্যদের বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাদের অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা এবং বিশ্লেষণ করে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন, বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আবুল কালাম আজাদ।