চট্টগ্রাম: চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মাহবুবুল আলম দেশের সাধারণ জনগণের কথা বিবেচনায় এবং মহামারী পরিস্থিতিতে ভোগ্যপণ্যের বাজার ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে পিআইএফ সৃষ্টির তারিখ থেকে অনধিক ৯০ দিন সময়সীমা নির্ধারণ করে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর বরাবরে এ ব্যাপারে মঙ্গলবার এক পত্রে তিনি বলেন, ১৩ জুন ২০২১ তারিখে প্রদত্ত বিআরপিডি সার্কুলার নং-১২ এর ধারা ২.২ (ক) অনুযায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে পিআইএফ এর মেয়াদ পিআইএফ সৃষ্টির তারিখ থেকে অনধিক ৯০ দিন। বিদেশ থেকে ৫০-৬০ হাজার টন ধারণক্ষমতার বড় জাহাজে কুতুবদিয়ায় সমুদ্রে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে ভোগ্যপণ্য খালাস করা হয়। তারপর নদীপথে চট্টগ্রামের সদরঘাটসহ দেশের বিভিন্ন নদী বন্দর ও নৌঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় ১টি জাহাজের ভোগ্যপণ্য জাহাজীকরণ থেকে খালাস পর্যন্ত ১০০-১২০ দিন সময় লাগে। এলসি নেগোসিয়েশন হয়ে বন্দরে আসতে সময় লাগে ক্ষেত্রভেদে ৪৫-৬০ দিন এবং খালাসে সময় লাগে ৬০-৭৫ দিন। বিভিন্ন সময় জাহাজজট, লাইটার জাহাজের স্বল্পতা, বৈরী আবহাওয়া, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কর্মবিরতিসহ নানা কারণে পণ্য খালাসে অতিরিক্ত সময় লাগে।
পত্রে তিনি উল্লেখ করেন-জাহাজ থেকে খালাসের পর ভোগ্যপণ্য গুদামজাতকরণ ও পরবর্তীতে বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ৬০-৮০ দিন ব্যয় হয়। তাছাড়া দেশের বাজারে এসব পণ্য শতভাগ বাকিতে বিক্রি করতে হয়, উক্ত অর্থ বাজার থেকে আদায় করতে ১০০-১২০ দিন সময় লেগে যায়। সহজ হিসাবে আমদানি করা ভোগ্যপণ্যের ক্যাশ কনভারশন সাইকেল সাধারণত ২০০-২৪০ দিন হয়। কাজেই পিআইএফ পরবর্তী ৯০ দিন সীমা প্রতিপালন করে আমদানিকারকদের পক্ষে ভোগ্যপণ্য আমদানি করে ব্যবসা করা বস্তুতঃপক্ষে সম্ভব হবে না। সময় মতো ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারার কারণে অনেক ব্যবসায়ী খেলাপীতে পরিণত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে চেম্বার সভাপতি মন্তব্য করেন। বর্তমানে বিশ্ব মহামারীর কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সীমিত হয়ে পড়েছে। ফলে নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ জীবন ও জীবিকা নির্বাহে কঠিন সময় পার করছে। এ পরিস্থিতিতে উল্লেখিত সময়সীমার কারণে আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হলে এবং খাদ্যপণ্য বা ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে তা অস্বচ্ছল মানুষের জন্য বড় ধরণের বিপর্যয় হয়ে দেখা দেবে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।