Home Third Lead ইউরো রোমেই গেল ইতালির হাত ধরে

ইউরো রোমেই গেল ইতালির হাত ধরে

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

ওস্তাদের মার শেষ রাতেই। আবারও ফলে গেল চিরকালের ওই প্রবাদ। ইংল্যান্ড যে বরাবরের চোকার্স, তাও প্রমাণিত ফের একবার। না হলে ৫৫ বছর পরে নিজেদের ঘরের মাঠে ইউরো কাপ সেরা হওয়ার সব উপাদান মজুত ছিল। কিন্তু ইতালি অভিজ্ঞ দল হিসেবে টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জিতে ইউরো নিয়ে গেল রোমে।

‘কামিং হোম’ হল না, হয়ে গেল ‘রিটার্নিং রোম’। তাও এক-দুই বছর পর নয়, ৫৩টি বছর পর। ১৯৬৮ সালে সর্বশেষ ইউরো জিতেছিল ইতালি। এরপর ২০০০ এবং ২০১২ সালেও ইউরোর ফাইনাল খেলেছিল আজ্জুরিরা। কিন্তু ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে। এবার আর খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে না কিয়েল্লিনিদের। টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে ৫৩ বছর পর ইউরোর ট্রফিটা রোমে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আজ্জুরিরা।

ইংল্যান্ড শেষ ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল এই মাঠে। তারপর কোনও বড় মঞ্চের ফাইনালে ওঠা এই প্রথমবার। তাও তারা পারল না স্রেফ স্নায়ুযুদ্ধে হেরে গিয়ে। টাইব্রেকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে গিয়ে তারা ডাহা ফেল। তাদের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট আনকোরা অল্পবয়সী ফুটবলারদের দিয়ে পেনাল্টি শ্যুট আউট করিয়েছেন। যা হওয়ার তাই হয়েছে, তাঁরা পেনাল্টি শ্যুট আউট মারতে গিয়ে হাঁটু কেঁপে গিয়েছে।

শুরুতে যদিও চমকে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। ইউরোর ইতিহাসে এর আগে কখনো ফাইনাল না খেলা দলটিই করে বসেছিল ফাইনালের ইতিহাসের দ্রুততম গোল। মাত্র দুই মিনিটে গোল করেছিলেন লুক শ। সেইসময় ইংল্যান্ডের খেলা দেখে মনে হবে তারাই বড় ব্যবধানে জিতবে।

বিরতির পর সব বদলে গেছে। ইতালি তাদের ছন্দে ফিরেছে, আক্রমণের ধারও বেড়েছে। ৬৭ মিনিটে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চি। খেলার ফল নির্ধারিত হয়নি অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটেও। টাইব্রেকারেই তাই যেতে হয়েছে দুই দলকে।  আর সেখানে ভাগ্য ফিরে তাকিয়েছে ইতালি দিকে। তারা যোগ্য দল হিসেবেই জিতল ইউরো কাপ।

সাধে কী আর মেগা ফাইনাল বলা হচ্ছিল এই ম্যাচটিকে। ইতালি ও ইংল্যান্ড, দুটি ইউরোপের মহাশক্তিধর দেশ কেউ কাউকে জমি ছাড়বে না, জানাই ছিল। তবুও রবিবার ইউরো কাপ ফাইনালের ম্যাচে প্রথমার্ধে ইংল্যান্ডকে বেশি জমাট লেগেছে। যদিও দ্বিতীয়ার্ধে তাদের দাপট উধাও হয়ে যায়।

টান টান উত্তেজনা, ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ। গ্যালারিতে ইংল্যান্ড রাজপরিবারের সদস্য যুবরাজ প্রিন্স উইলিয়ামস ও তাঁর স্ত্রী ক্যাথি। গ্যালারিতে দেখা গিয়েছে ডেভিড বেকহ্যাম, আরও অনেক নামী প্রাক্তনদের। তাঁরাও খেলা শেষে বিফল মনোরথ হয়ে বাড়ি ফিরলেন।

ঘরের মাঠের দর্শক সমর্থন কাজে লাগিয়ে ব্রিটিশ ঝড় ছিল ম্যাচের শুরু থেকেই। ইতালি রক্ষণ চাপে পড়ে গিয়েছিল। প্রথমবারের মতে ইউরো ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করতে যাচ্ছে ইংলিশরা, তাই বোঝা গিয়েছিল, কিন্তু শেষে যে করুণ চিত্রনাট্য লেখা হবে কেই বা জানতো। ম্যাচের দুই মিনিটে কর্নার কিক পায় ইতালি। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল ক্লিয়ারই করা নয় শুধু নিজেদের নিয়ন্ত্রণেও ধরে রাখে ইংল্যান্ড। উঠে যায় কাউন্টার অ্যাটাকে।

ইতালির বক্সের ডান পাশ থেকে বাঁ পাশে লম্বা পাস দেন কিয়েরান ট্রিপিয়ার। দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা লুক শ ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শট নেন তাতে। মুহূর্তেই বলটি জড়িয়ে গিয়েছে ইতালির জালে।

শুরু থেকেই ইতালি এবং ইংল্যান্ড গতিময় ফুটবল উপহার দেওয়া শুরু করেছে। প্রতি মুহূর্তেই বল ছুটে চলেছে মাঠের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। যে কারণে প্রথম মিনিটেই গোলের চেষ্টা ইতালির। হ্যারি ম্যাগুইরে কর্নারের বিনিময়ে সে চেষ্টা প্রতিহত করেন।

সব চেষ্টাই বৃথা হয়ে গিয়েছে ব্রিটিশদের কাছে। ঘরের মাঠে তাদের এই হার লজ্জারই। তারা যে ফর্মে ছিল, কাপ আসবে তাদের মিডিয়া সেই ভাবে প্রচার করেছিল। কিন্তু রবার্তো মানচিনির কোচিংয়ে ইতালি কত উন্নতি করেছে, তা দেখল ফুটবল দুনিয়া।