Home রেমিটেন্স যোদ্ধাদের খবর রেমিট্যান্সের জাদু সম্ভবত শেষ: ড. দেবপ্রিয়

রেমিট্যান্সের জাদু সম্ভবত শেষ: ড. দেবপ্রিয়

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: এতদিন রেমিট্যান্সের যে জাদু ছিল সেটা সম্ভবত শেষ হতে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কনভেনর ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য।

রবিবার (৮ আগস্ট) নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ বাস্তবায়ন: পিছিয়ে পড়া মানুষেরা কীভাবে সুফল পাবে?’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল, সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ বিশিষ্টজনরা।

সংলাপে প্রবন্ধ আলোচনার সময় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, বাংলাদেশে শুধু আয়, কর্মসংস্থান ও মজুরি কমছে না, খাদ্যমূল্যের দামও বাড়ছে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় বিশেষ করে মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন মাসের প্রভাব নিয়ে ২০২১-২০২২ অর্থবছর শুরু করেছি। অনেকটা দুর্বল অর্থনীতির মধ্যে চলতি বছর শুরু করেছি। আর এর সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে পিছিয়ে পড়া মানুষের ওপর। অন্যদিকে জুলাই মাসের হিসাবে রফতানি হার কমেছে ১১.২ শতাংশ। অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী জায়গা ছিল বৈদেশিক খাত। জুলাই মাসের তথ্য বলছে বৈদেশিক খাতেও এক ধরনের ভাঙন দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই মাসে ২৮ শতাংশ রেমিটেন্স কমেছে বা পতন ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা সবাই একমত হবে রেমিটেন্সের যে জাদু সেটা সম্ভবত শেষ হতে চলেছে। কারণ মানুষ বিদেশে গিয়েছে কম, এসেছে বেশি। সরকারি প্রণোদনার কারণে হুন্ডি থেকে মানুষ ব্যাংকিং খাতে টাকা পাঠিয়েছে। এ অবস্থায় জাদু শেষ হয়ে যাচ্ছে কি না সেটাই বোঝার বিষয় রয়ে গেছে। রফতানি আবার আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারব কি না সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। কর আদায়সহ সব সূচক যদি বিবেচনায় নেন তাহলে দেখবেন প্রাথমিক সংকেত কিন্তু ভালো না।

পিছিয়ে পড়া মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রত্যক্ষ সহায়তা বাড়াতে হবে উল্লেখ করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মহামারির মধ্যে পিছিয়ে পড়া মানুষদের কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। সেজন্য উন্নয়নশীল দেশে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সহায়তায় সরাসরি অর্থের সাহায্য বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে হবে। এর পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা মহামারি শুরুর পর থেকে পিছিয়ে পড়া ৮০ শতাংশ মানুষ খাদ্য ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

অন্যদিকে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এবারে বাজেটে পিছিয়ে পড়া গরিব ও অসহায় মানুষদের বাইরে রাখা হয়েছে। বাজেটে বরাদ্দের কথা বলা হলেও কীভাবে তা ব্যয় হবে, সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কতটুকু থাকবে সে বিষয়টি দেখা যায়নি। এছাড়া দুর্নীতির প্রতিরোধে বাজেটে সুস্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। আমি মনে করি এ বছর বিব্রতকর, দুর্নীতি বান্ধব, বৈষম্যমূলক ও কালো টাকা সহায়ক বাজেট হয়েছে। কিন্তু পিছিয়ে পড়া মানুষকে কীভাবে সহায়তা করবে বাজেটে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেখতে পাই না।