বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সেনাবাহিনীর সৈনিকরা গত কয়েকদিন ধরে ফের জোট বাঁধছেন। তালিবানের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতি চালাচ্ছেন তাঁরা। একইসঙ্গে তাঁদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁরা তালিবানের সঙ্গে বোঝাপড়ারও পক্ষপাতী। তালিবান কাবুল দখলের পরেই কয়েক হাজার আফগান পাড়ি দেন পঞ্জশিরের উদ্দেশে। ওই অঞ্চলটি দখল করতে পারেনি জঙ্গিরা। আফগান নাগরিকরা সেখানে গিয়ে প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন।
বিখ্যাত মুজাহিদিন কম্যান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদকে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের দু’দিন আগে খুন করেছিল আল কায়েদা। তাঁর ছেলে আহমেদ মাসুদ পঞ্জশির অঞ্চলে ৯ হাজার সেনা নিয়ে তালিবানের বিরুদ্ধে বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তবে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের প্রাথমিক লক্ষ হল ফের রক্তপাত এড়ানো। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, তালিবানের সঙ্গে কয়েকটি শর্তে আমাদের বোঝাপড়া হতে পারে। প্রথমত ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত সামাজিক ন্যায়, সমতা, মানবাধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
কয়েকদিন আগে শোনা যায়, তালিবানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘটেছে আফগানিস্তানের অন্তত একটি অঞ্চলে। আফগানিস্তানের খামা প্রেসের খবর অনুযায়ী, উত্তর বাগলান প্রদেশের পোল ই হিসার জেলায় তালিবানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ হয়েছিল। ওই জেলাটি আপাতত জঙ্গিদের হাতছাড়া হয়েছে। স্থানীয় মানুষ দাবি করছেন, দেহ সালাহ এবং কোয়াসান নামে দু’টি জেলাতেও আর তালিবানের নিয়ন্ত্রণ নেই।
আফগান সরকারের প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বিসমিল্লা মুহম্মদি টুইটারে লিখেছেন, “তালিবানকে প্রতিরোধ করা আমাদের কর্তব্য। প্রতিরোধ বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। বাগলান প্রদেশের পোল ই হিসার, দেহ সালাহ এবং বানু জেলা তালিবানের হাত থেকে কেড়ে নেওয়া গিয়েছে।” স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন, সশস্ত্র প্রতিরোধে অন্তত ৪০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১৫ জন। তালিবানের তরফে কেউ এখনও এই প্রতিরোধ নিয়ে মন্তব্য করেনি।
বৃহস্পতিবার থেকে কাবুলে কার্ফু জারি করেছে তালিবান। শহরবাসীকে বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ রাত ন’টার পরে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না।
এর মধ্যে জানা যায়, তালিবানের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছে জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার একটি শাখা। ‘আল কায়েদা ইন আরবিয়ান পেনিনসুলা’ নামে ওই শাখা সংগঠন বাদে আরও কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন তালিবানকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
সিরিয়ার হায়াত তাহরির অল শাম (এইচটিএস) নামে এক জঙ্গি সংগঠন বলেছে, তালিবান আমাদের প্রেরণা। পশ্চিম চিন থেকে তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি বিবৃতি দিয়ে তালিবানের জয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছে। তহরিক ই তালিবান পাকিস্তান নামে সংগঠনটিও বলেছে, তারা আফগানিস্তানের তালিবান নেতাদের মেনে চলবে। একই সঙ্গে তারা জানিয়ে দিয়েছে, আগামী দিনে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ওপরে আক্রমণ চালিয়ে যাবে।