কুড়িগ্রাম থেকে নয়ন দাস: সেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও বাউল শিল্পী খ্যাত ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মোঃ সাজু আহমেদ কর্তৃক তার মা রাণীজন বেওয়া নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। রাণীজন বেওয়া কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পান্ডুল ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সাজু আহমেদ নিজেকে প্রার্থী হিসেবে এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। টাকা পয়সার প্রয়োজনে নিজের পৈত্রিক জমি বিক্রি করতে না পেরে মায়ের সাথে মনোমালিন্য হয়। এরই জের ধরে গত ০৩/০৯/২০২১ইং শুক্রবার দুপুরে পরিবারের লোকজনের সাথে কথাকাটাকাটির জেরে সাজু কর্তৃক তার মা রাণীজন বেওয়া নির্যাতিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গুরুতর আহত মা, কুলাঙ্গার ছেলের যাবজ্জীবন শাস্তি দাবী করেছেন।
জানা যায়, ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সাজু আহমেদ শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য তার পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। তার মা রাণীজন বেওয়া সন্তানকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জমি মর্টগেজ রেখে টাকা সাজুর হাতে তুলে দেন। সন্তান প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের সকল জমি উদ্ধার হবে এবং পরিবারের স্বচ্ছলতা ও শান্তি আসবে- এটাই ছিল সাজুর মায়ের স্বপ্ন। কিন্তু ক্লোজআপ ওয়ান তারকা খ্যাত কণ্ঠশিল্পি সাজু আহমেদ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হলেও জমিগুলো আর উদ্ধার করা হয়নি। বিভিন্ন ভাবে টাকা যোগাড় করে সাজুর মা রাণীজন বেওয়া জমির কিছু অংশ উদ্ধার করে। বর্তমানে উক্ত জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে। সাজু তার পৈত্রিক সম্পত্তির হিস্যা বুঝে চাইলে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে গত ১৬ আগস্ট শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে এক বছরের জন্য সকল জমি তার মাতা রাণীজন বেওয়ার নিয়ন্ত্রণে হালচাষ করার মৌখিক সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাজু আহমেদ বলেন, ‘আমি জমির অংশ দাবি করেছি বলে আমার মা ও বড় বোন আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আমি মায়ের ওপর আঘাত করিনি। বোনের ছোড়া ঢিল আমার শরীরে না লেগে মায়ের মাথায় লেগেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।’
সাজুর বড় বোন ও থানায় অভিযোগকারী আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘সে আমাকে কয়েকবার মারতে চেয়েছে। পরে আমার মা প্রতিবাদ করায় সে মাকে চাকু দিয়ে আঘাত করে। আমার চোখের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। এসময় অনেকে বাড়িতে উপস্থিত ছিল। এখন সে নিজের দোষ ঢাকতে আমার ওপর দায় চাপাচ্ছে। মা তো নিজেই তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।’ উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ভুক্তভোগীর বড় মেয়ে বাদী হয়ে অভিযোগ করেছেন।’ তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।