Home তথ্য প্রযুক্তি মঙ্গলের মাটি আসছে পৃথিবীতে

মঙ্গলের মাটি আসছে পৃথিবীতে

ছবি: ইন্টারনেট

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

বিশাল যান্ত্রিক হাত দিয়ে মাটি খামচে তুলে ফেলেছে নাসার (NASA) রোভার পারসিভিয়ারেন্স। মঙ্গলের (Mars) জেজেরো ক্রেটার থেকে নুড়ি-পাথর, মাটি (মার্সিয়ান সয়েল) টাইটেনিয়ামের তৈরি টিউবে ভরে সিল করে এবার পাঠিয়ে দেবে পৃথিবীতে। সে প্রস্তুতি চলছে। সূদূর মঙ্গল গ্রহ থেকে লাল মাটি আসছে পৃথিবীতে, তার জন্য প্রস্তুতি বিরাট, হইচইও কম হচ্ছে না। নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরিতে বিশাল তোড়জোড় চলছে। মঙ্গলের মাটি পৃথিবীর মাটি ছুঁলেই ইতিহাস রচিত হবে।

লাল মাটি নাসার গবেষণাগারে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে মঙ্গলের মাটিতে আদৌ প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা, অথবা সুদূর অতীতে আণুবীক্ষনিক প্রাণ ছিল কিনা। ১ সেপ্টেম্বর থেকে পারসিভিয়ারেন্স রোভারের রোবোটিক আর্ম মাটি তোলা শুরু করেছে।  নাসার প্রধান বিল নেলসন বলেছেন, প্রাণের খোঁজে মঙ্গলের মাটি নাসার ল্যাবরেটরিতে নিলে তা হবে মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনা। প্রথমবার এই অসাধ্য সাধন করবে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

ছ’টা চাকা নিয়ে মঙ্গলের লাল মাটিতে তরতরিয়ে ছুটে চলেছে নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার। জেজেরো ক্রেটারে নামার পর থেকে তার আর এক মুহূর্ত বিশ্রামের সময় নেই। এই জেরেরো ক্রেটারেই কোটি কোটি বছর আগে বিলীন হয়ে গেছে বড় বড় নদী। মৃত নদীর ফসিল আর গভীর গিরিখাতের চিহ্ন বইছে এই গহ্বর, মঙ্গলের দুর্গমতম স্থানগুলির মধ্যে একটি।

Perseverance Kicks Off Elaborate Effort to Bring Mars Rocks to Earth |  Science | Smithsonian Magazine
Jezero Crater Was a Lake in Mars' Ancient Past | NASA

এবারে নাসার মঙ্গলযানের আরও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে তা হল ‘ইনজেনুইটি মার্স হেলিকপ্টার’ । চার কার্বন-ফাইবার ব্লেড যুক্ত আছে দুটি রোটরের সঙ্গে, ঘুড়বে ২৪০০ আরপিএম-এ। রোভারের পেটের সঙ্গে জোড়া আছে এই হেলিকপ্টার। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর থেকে অনেক পাতলা। তাই রোভারকে একজায়গা থেকে অন্যজায়গায় খুব দ্রুত পৌঁছে দিচ্ছে এই হেলিকপ্টার। এটা অনেকটা পৃথিবীর ড্রোনের মতো। রোভার যখন অনেক স্যাম্পেল জোগাড় করে একজায়গা থেকে অন্যজায়গায় যেতে চাইবে তখন এই হেলিকপ্টার সাহায্য করবে। কারণ মঙ্গলের মাটি তো পৃথিবীর মতো নয়, এখানে রুক্ষ পাহাড়ি উপত্যকা, গিরিখাত রয়েছে। সেইসব পেরিয়ে রোভারকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই এয়ারক্রাফ্ট।

রোভার এখন যে জায়গায় রয়েছে তার নাম জেজ়েরো ক্রেটার, ১৮.৩৮ ডিগ্রি উত্তর ও ৭৭.৫৮ ডিগ্রি পূর্বে অবস্থিত এই ক্রেটার। মনে করা হয় এই ক্রেটারের বয়স প্রায় ৩৫০ কোটি বছর। ক্রেটারের চারপাশের পাথুরে জমি, গিরিখাতের ছবি পাঠিয়েছে রোভার। ৪৯ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই গহ্বর বিরাট একটা বাটির মতো। এই ক্রেটারকে বলা হয় মঙ্গলের ডেল্টা। মনে করা হয় এখানে একসময় বড় বড় নদী বয়ে যেত। ক্রেটারের মাটিতেও জলের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলে। আর যেখানে জল, সেখানে প্রাণের জন্ম হওয়া স্বাভাবিক। কোটি কোটি বছর আগে যখন নদীরা বিলুপ্ত হয়ে যায়নি, তখন এখানে আনুবীক্ষণিক জীবদের জন্ম হয়েছিল বলেই মনে করা হয়। পারসিভিয়ারেন্স এই ক্রেটারে ঘুরে ঘুরেই সেই হারিয়ে যাওয়া প্রাণের খোঁজ করছে।