বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
তালিবান মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে আন্তর্জাতিক মহলে। এরই মধ্যে তাদের শিক্ষামন্ত্রী শেখ মৌলভি নুরুল্লা মুনিরের একটি মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নেট দুনিয়ায়। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, মুনির বলছেন, “আজকের দিনে কোনও মাস্টার্স ডিগ্রি বা পিএইচডি-র দাম নেই। আপনারা নিশ্চয় জানেন যে মোল্লা ও তালিবান নেতারা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের পিএইচডি, মাস্টার্স এমনকি হাইস্কুলের ডিগ্রিও নেই। কিন্তু তাঁরাই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি।”
ওই ভিডিও দেখে টুইটারে একজন মন্তব্য করেছেন, “এই লোকটি শিক্ষা নিয়ে কথা বলছে কেন?” আর একজন বলেছেন, “উচ্চশিক্ষামন্ত্রী নিজে বলছেন উচ্চশিক্ষার কোনও দাম নেই।” একজন বলেছেন, “শিক্ষা সম্পর্কে এই মন্তব্য লজ্জাজনক। এই ধরনের লোক ক্ষমতায় আসায় তরুণ-তরুণীরা, বিশেষত শিশুরা বিপদে পড়বে।”
বুধবার তালিবানের ‘সুপ্রিম লিডার’ হাইবাতুল্লা আখুন্দজাদা ঘোষণা করেছেন, আগামী দিনে আফগানদের জীবন নিয়ন্ত্রিত হবে পবিত্র শরিয়ার নীতি অনুযায়ী। রাষ্ট্রপুঞ্জে আফগানিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি গুলাম ইসাকজাই এদিন টুইট করে বলেন, “তালিবান মন্ত্রিসভার ৩৩ জন সদস্যের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। তাঁদের মধ্যে আছেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী, দুই উপপ্রধানমন্ত্রী, অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী।”
তালিবান মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন কুখ্যাত হাক্কানি নেটওয়ার্কের দুই নেতা। তাঁদের মধ্যে সিরাজুদ্দিন হাক্কানি হয়েছেন অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী। তাঁর কাকা খলিল হাক্কানি হয়েছেন শরণার্থী বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী। সিরাজুদ্দিন ও খলিল হাক্কানির নাম এখনও রয়েছে আমেরিকার সন্ত্রাসবাদী তালিকায়। ২০১৬ সালে সিরাজুদ্দিনের মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ১ কোটি ডলার। অর্থাৎ ৭৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
গত সপ্তাহে আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, তাঁর পরামর্শেই কট্টরপন্থী তালিবান নেতা মোল্লা হাসান আখুন্দকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে। একসময় শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী হবেন মোল্লা আবদুল গনি বরাদর। তিনি তালিবানের দোহা গোষ্ঠীর সদস্য। ওই গোষ্ঠীর নেতারা বাস্তববাদী বলে জানা যায়। সম্ভবত পাকিস্তানের বাধায় মোল্লা বরাদর প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি।
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পাকিস্তানের চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন দোহা গোষ্ঠীর নেতারা। ওই গোষ্ঠীর নেতা শের আব্বাস স্তানেকজাই কাতারে ভারতের দূতের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি হয়েছেন উপ বিদেশমন্ত্রী।