মো: রবিউল ইসলাম রিপন,পঞ্চগড় থেকে: পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করায় ৪ বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীকে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অপরাধে সাময়িক বহিস্কার করেছে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগ।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার সাদাত সম্রাট সাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেই সাথে দলীয় মেয়র প্রার্থীকে পৌর নির্বাচনে জয়ী করতে উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীদের একে যোগে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আওয়ামীলীগ মনোনীত গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বাদে বাকী ৮ মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে যে কোন কারচুপির বিরুদ্ধে একত্রে কাজ করার ঘোষনা দিয়েছেন। বহিস্কৃত দেবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুর নেওয়াজ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন নিউটন।
বহিস্কারাদেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুর নেওয়াজ বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোন চিঠি পাইনি আমি। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন জেলা আওয়ামী লীগ আমাকে কি বহিস্কার করবে? আমি তো জন্মগত ভাবে আওয়ামী লীগ করি। এ পৌরসভার সীমানা জটিলতা থেকে শুরু করে পৌরসভা কার্যক্রমের জন্মলগ্ন থেকে আমি পৌরবাসীর উন্নয়নে ব্যক্তিগত ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার প্রতি এখানকার মানুষের আস্থা এবং ভালবাসা আছে। তারা আমাকে ২০ সেপ্টেম্বর তাদের একটি করে মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তাদের ভালোবাসার প্রমাণ দিবে।
আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন আমাদের বহিস্কার কে করেছে? আমরা তো নিজে থেকেই দল করি। বহিস্কারের বিষয়ে কোন চিঠি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, শুনেছি তবে এখনো কোন চিঠি পাইনি। আমার কাছে দল বড় না এখানকার মানুষ আমার কাছে বড়। আমি আশা করি এখানকার মানুষ আমাকে নির্বাচিত করে সকল ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট দেবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ৪ বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীকে সাময়িক বহিস্কারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তারা দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ এবং দলের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজ করেছেন। এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনিত মেয়র প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনকরছেন।
দলের অপর বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুর নেওয়াজ মোবাইল ফোন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক রেল ইঞ্জিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ক্যারাম বোর্ড, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন নিউটন জগ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
পৌরসভাসহ আগামীতে সব ধরনের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিলেও দলের দুই নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনেঅংশ গ্রহন করেছেন। তাদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এফ এস এম মোফাখখারুল আলম বাবু (বিএনপি বাবু) চামচ প্রতীকে এবং পৌর যুবদলের আহবায়ক সরকার ফরিদুল ইসলাম নারিকেল গাছ প্রতীকে লড়ছেন। এ ছাড়াও অপর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে দৈনিক যুগান্তরের সহ-সম্পাদক জাকারিয়া ইবনে ইউসুফ ইস্ত্রি মেশিন ও মাসুদ পারভেজ কম্পিউটার প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
কাউন্সিলর পদে ৬৩ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৮ জন প্রার্থীপ্রতিদ্বন্দিতা করছেন।উল্লেখ্য দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন ও দেবীডুবা ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে ২০১৪ সালে গঠিত হয় দেবীগঞ্জ পৌরসভা। ইতোপূর্বে ২ দফায় নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাবার পর প্রথম বারের মতো এই পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পৌরসভায় মোটভোটার ১০ হাজার ৯১৪ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৩৩৬ জন এবং নারী ভোটার ৫ হাজার ৫৭৮ জন।