Home Second Lead গ্রাম থেকে-শেষ: বেড়েছে স্বাচ্ছন্দ, ছেলে-মেয়েরা পড়ে কলেজ-ভার্সিটিতে

গ্রাম থেকে-শেষ: বেড়েছে স্বাচ্ছন্দ, ছেলে-মেয়েরা পড়ে কলেজ-ভার্সিটিতে

ঢেঁকির প্রচলন এখনও আছে কোন কোন গ্রামে। বল্লভপুরের ছবি

খোন্দকার মহিতুল ইসলাম রঞ্জু:

গ্রামের মানুষের স্বাচ্ছন্দ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে, একথা নিদ্বিধায় বলা যায়।

 গ্রামের বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে।

প্রায় প্রতিটি বাড়িতে হাঁস মুরগি আছে। আছে ছাগল। মাচায় ঝুলছে লাউ। সিমের ফলনও ভাল। এক বাড়িতে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করা হচ্ছিল। সন্ধ্যায় পিঠে বানানো হবে। উঠোনে আমাদের চেয়ার পেতে দেয়া হলো। গল্প জুড়লাম বৌ ঝিদের সাথে।শিশুরাও ঘিরে দাঁড়ালো।

 বেগম ফুপু যতদিন বেঁচে ছিলেন, তার ঘরের উঠানে গেলে পিঠ সাপ্টিয়ে ঘরে বসতে দিতেন। গল্প করতেন। তিনি অতি দরিদ্র ছিলেন। আমার বাবার মামাতো বোন। আমার বাবা যতদিন বেঁচে ছিলেন, তাকে সময়ে সময়ে সাহায়্য করার চেষ্টা করতেন।। তার ছেলে বেলাল। অনেকদিন বিদেশে চাকরি করেছে। এখন মিলেঝিলে এলাকায় ইটখোলা দিয়েছে।

 বেলালের বউ পর্দানশীন। যতবড় আত্মীয় হোক, পুরুষ মানুষ তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় ঢুকতে পারবে না। এটা ধর্মীয় বিধান। তাই বেগম ফুপুর মৃত্যুর পর ওই বাড়ি আমি এড়িয়ে চলি। ওই পথ দিয়ে হাঁটলেই মনে পড়ে ফুপুর অমায়িক ব্যবহার। এছাড়া গ্রামে গেলে অন্য বাড়িগুলোতে আমি যাই। কথা বলি। আমার ধারণা, এতে তারা অনেক খুশি হয়।

গ্রামের গরীব মানুষের স্বাচ্ছন্দ আনতে দুটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্র্যাকের ব্যাপক অবদান রয়েছ্। বউ ঝিরা এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছে। তাদের সপ্তাহে কিস্তি পরিশোধ করতে হয়।

একজন বললেন, আমার অনেক হাঁস আছে। গড়ে প্রতিদিন এক ডজন করে ডিম পাই। প্রতি হালি ডিম ক্রেতারা বাড়ির উপর এসে সংগ্রহ করে ৫০ টাকায়। দেশী মুরগীর ডিমও একই দাম। এরও চাহিদা ব্যাপক। অনেক বাড়ির গোয়ালে গরু আছে। গরুর দুধ প্রতি লিটার ৫০ টাকা। প্রায় ঘরেই ছাগল পোষা হয়। ছাগল বেচে ভাল দাম পায় এরা।

আমাদের সিদ্দিক চাচা মারা গেছেন। আমার বাবার মামাতো ভাই। তার দুই ছেলের মধ্যে ছোটজন জিল্লুর একটা বাছুর কিনেছিল ৪০ হাজার টাকায়। অল্প কিছুদিন হলো হাটে বিক্রি করেছে এক লাখ টাকা। ওই টাকা আবার লগ্নি করেছে পিঁয়াজ চাষে। পিঁয়াজের নতুন ফলন উঠতে না উঠতে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। দেখলাম, তাদের উঠোনে সদ্য মাঠ থেকে তোলা পিঁয়াজে ঠাঁসা। এবার দেশে পিঁয়াজের আকাল গেছে। চাষীরাও তাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে পিঁয়াজ চাষে।