Home কলকাতা বারাসাতের মাটির মেলা

বারাসাতের মাটির মেলা

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

শীত পড়তেই কলকাতা শহরতলীর নানা প্রান্তে শুরু হয়ে গেছে মেলার মরশুম। এবছর দ্বিতীয় বর্ষে পা রাখল বারাসাতের মাটির মেলা। গত শুক্রবার ২৪ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করলেন ফ্যাশন ডিজাইনার তথা বিধায়িকা, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদিকা অগ্নিমিত্রা পাল। সঙ্গে ছিলেন এইসময়ের জনপ্রিয় লোকসংগীত-শিল্পী তীর্থ ভট্টাচার্য। বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হস্তশিল্পীরা তাঁদের সৃজনশীল পসরা নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন এই মেলায়।

শতাধিক নাম-না-জানা হস্তশিল্পীর প্রতিভার অনন্য স্বাক্ষর আগামী কিছুদিন সাজানো থাকবে গোটা মেলা-চত্বর জুড়ে। গত বছর চারদিনব্যাপী আয়োজিত হলেও বারাসাতের স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা ও ভালোবাসায় এই বছর ‘মাটির মেলা’ চলবে ১০ দিন, অর্থাৎ ২রা জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত।

দশ দিনের এই ‘মাটির মেলা’য় থাকছে মাটির তৈরি নানা শিল্পকর্ম থেকে শুরু করে পাট, হ্যান্ডমেড পেপার, গাছ, শীতলপাটি, সুগন্ধি, গয়না, খাদির পোশাক, শাড়ি ইত্যাদি হাতের তৈরি রকমারি সামগ্রী। খাদ্য রসিকদের নজর কাড়তে রয়েছে নানা স্বাদের পিঠেপুলির স্টল। এছাড়াও প্রতিদিন থাকছে নাচ-গান, নাটক সহ একাধিক সাংস্কৃতিক আয়োজন। মেলা প্রাঙ্গণে বাউলগান ও ছৌ-নাচের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এ বছর মেলাপ্রাঙ্গণে ৪১ টি স্টলের আয়োজন করা হয়েছে, যার প্রতিটিতেই থাকবে বাংলার নানা অঞ্চলের নিজস্ব শিল্পসামগ্রি ও হস্তকলা।

মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিন লোকগান পরিবেশন করেন সুবিখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী তীর্থ ভট্টাচার্য। এছাড়াও সঙ্গীত পরিবেশনে রয়েছেন শ্রাবণী সেন, ইন্দ্রানী সেন, স্বর্গীয় কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যর স্মৃতি বিজড়িত ‘দোহার’ ব্যান্ড। থাকছে গ্রুপ থিয়েটার ‘লোককৃষ্টি’ দলের নাটক। এবারে মেলার বড় চমক বারাসাতের নিজস্ব গানের দল ‘গাছের জন্য গান’-এর অভিনব উপস্থাপনা। গান গেয়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ রোপণ করেন এঁরা। সব মিলিয়ে মাটির টানেই মাটির মেলা উত্তর ২৪ পরগনা জলা সদরে এক ভিন্ন মাত্রা সংযোজন করেছে।

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিন মেলার আয়োজক সুদেষ্ণা ভট্টাচার্য জানালেন, ‘বাংলার হস্তকলা ও অভিনব সৃজনের সঙ্গে যুক্ত অপরিচিত অথচ প্রতিভাময় মুখগুলোকেই খুঁজে আনতে চেয়েছি আমরা, যাতে তাঁদের অসামান্য সব সৃষ্টি সবার সামনে তুলে ধরতে পারি। আমাদের বিশ্বাস এই ‘মাটির মেলা’ শিল্পী ও শিল্পের গুণগ্রাহীদের এক মিলনতীর্থ হয়ে উঠবে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা অতিমারী আমাদের সবার জীবনে গভীর ছাপ রেখে চলেছে। এই হস্তশিল্পীদেরও অতিমারীর প্রভাবে খুবই করুণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাঁদের আর্থ-সামাজিক দুর্দশা যদি এই মাটির মেলার মাধ্যমে সামান্য বদলাতে পারি তবেই এই আয়োজনের সার্থকতা।”