বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রামছ: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রবিবার চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভিস জেটি এবং নবসংগৃহিত টাগবোটের উদ্বোধন করেন।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, বে-টার্মনাল এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর ‘রিজিওনাল মেরিটাইম কানেক্টিভিটি হাব’ হবে। তিনি বলেন, বন্দরের জন্য টাগবোট সংগ্রহ, সার্ভিস জেটি নির্মাণ, নিউমুরিং কন্টেইনার ওভারফ্লো ইয়ার্ড নির্মাণ এবং অন্যান্য স্থাপনা সংযোজন বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য নতুন মাইলফলক।
প্রায় ১৪ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন একটি সার্ভিস জেটি চালু করা হলো। কর্ণফুলী নদীর তীরে নগরীর আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিং এলাকায় ১ নম্বর জেটির উজানে এ জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। সার্ভিস জেটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮৩ কোটি টাকা। জেটিতে ২২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২০ মিটার প্রস্থের ৫ মিটার ড্রাফটের (গভীরতা) ১০০ মিটার লম্বা দুটি জাহাজ একসঙ্গে ভিড়তে পারবে। চট্টগ্রামে বন্দরের ১নম্বর গেইট সংলগ্ন সার্ভিস জেটির উদ্বোধন করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে খুবই গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাভাবিক কর্মকান্ডের চেয়ে আরো বেশী গতিশীল হয়েছে। এসব সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে। করোনা মহামারীর মধ্যেও উন্নয়ন শুধু দেশের মধ্যে নয়: সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে ৫টি অগ্রসরমান দেশের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীরসঠিক ও দক্ষ নেতৃত্বে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পেরেছি। সঠিক, দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্ব পেলে দেশ এগিয়ে যেতে পারে-বাংলাদেশ একটি উদাহরন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পর বাংলাদেশ সঠিক নেতৃত্ব পায়নি। এখন শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের রিজার্ভ ৫০ বিলিয়নের ওপরে, রেমিটেন্স বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ তর তর করে এগিয়ে যাচ্ছে। এর চালিকাশক্তি চট্গ্রাম বন্দর। অর্থনীতির গেইটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের ফলে বিদেশীরা দেশে বিনিয়োগের জন্য ধর্না দিচ্ছে। দেশের ও বন্দরের স্বার্থরক্ষা করে কাজ করব।এটিকে পিছিয়ে দেয়ার জন্য টেনে ধরার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বের কারণে ষড়যন্ত্রকারীদের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র সফল হতে পারেনি। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশ এগিয়ে যাবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন।
নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাসেও এ সার্ভিস জেটি ব্যবহার করা যাবে। নতুন সার্ভিস জেটি চালু হওয়ায় বন্দরের মালিকানাধীন বিভিন্ন জাহাজের সুরক্ষা ও বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে গতি আসবে। বন্দরের উদ্ধারকারী জাহাজ, টাগবোট, জরিপ জাহাজ, আউটার থেকে বিদেশি জাহাজগুলোকে জেটিতে আনার দায়িত্বে থাকা পাইলটদের বোট, ফায়ার ফাইটিং বোট, পানি সরবরাহকারী জাহাজসহ প্রয়োজনীয় সকল জাহাজ সার্ভিজ জেটি ব্যবহার করবে।
প্রতিমন্ত্রী সার্ভিস জেটিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য নবসংগৃহিত টাগবোট উদ্বোধন করেন। বন্দরে আগত বড় বাণিজ্যিক জাহাজসমূহের নিরাপদ বার্থিং/আনবার্থিংয়ে সহায়তা প্রদান টাগবোটের মূল কাজ।
পরে প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নবনির্মিত নিউমুরিং কন্টেইনার ওভারফ্লো ইয়ার্ড, নবনির্মিত সুইমিংপুল কমপ্লেক্স, বাস্কেটবল গ্রাউন্ড এবং টেনিস কোর্ট এর উদ্বোধন করেন।
নিউমুরিং কন্টেইনার ওভারফ্লো ইয়ার্ডটি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর সুবিধা বৃদ্ধির যুগোপযোগি চাহিদা মিটাবে। ইয়ার্ডটির আয়তন ৯০,৫২১ বর্গমিটার। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৭৬ কোটি টাকা। সুইমিংপুল কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। টেনিস কোর্ট ও বাস্কেটবল গ্রাউন্ড নির্মাণে ব্যয় হয়েছে তিন কোটি ৩৩ লাখ টাকা।