Home Uncategorized অনলাইন সুপারশপের ফাঁদে কোটি টাকা আত্মসাৎ

অনলাইন সুপারশপের ফাঁদে কোটি টাকা আত্মসাৎ

আঁখি সুপারশপ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

সিলেট: ‘একটি পণ্য কিনলে একই পণ্য আরেকটি ফ্রি তথা শতভাগ ক্যাশব্যাক’ বলে ফেসবুক প্রচারণা চালিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে একটি অনলাইন সুপার শপের বিরুদ্ধে। মহানগর হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক মো. সাইফুর রহমান অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

ঐ সুপার শপটির নাম ‘আঁখি সুপার শপ’। নগরীর শাহপরান উপশহর এলাকার বাসিন্দা মো. জিয়াউর রহমান (৪০) ও মো. আশরাফ হোসেন (৪৭) দু’টি মামলা দায়ের করেছেন সুপারশপটির ‍বিরুদ্ধে।

রবিবার (২ জানুয়ারি) দুজনের নামোল্লেখ করে মামলা দু’টি দায়ের হয়েছে। মামলা দু’টির আসামিরা হলেন- ‘আঁখি সুপার শপ’ এর মালিকপক্ষ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাসনীপুর গ্রামের আসমা শারমিন আঁখি (২৬) ও পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার পুন্ডুরিয়া গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩১)। অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে মামলায়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, আঁখি সুপার শপ কর্তৃপক্ষ ‘একটি পণ্য কিনলে একই পণ্য আরেকটি ফ্রি তথা শতভাগ ক্যাশব্যাক’ বলে ফেসবুকে নিজেদের পেজে প্রচারণা চালায়। এমন প্রচারণায় মামলার বাদীগণ আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে যান। গেল বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর অবধি দুটি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিকস পণ্য এবং তেল ও দুধ ক্রয়ের জন্য তারা একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে আঁখি সুপার শপের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেন।

টাকা জমা দেওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ক্রয় রশিদ প্রদান করে দ্রুত পণ্য হোম ডেলিভারি দেওয়া হবে বলে জানায়। কিন্তু পণ্য না পেয়ে তারা প্রতিষ্ঠানটির ফোন নম্বরে কল করে সেটি বন্ধ পান। পরবর্তীতে তারা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখতে পান। অন্যান্য গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পণ্য না পাওয়া ও প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি টের পান তারা।

একটি মামলার বাদী মো. জিয়াউর রহমান ৩ লাখ ৭ হাজার ২০০ টাকা এবং অপর মামলার বাদী আশরাফ হোসেন ৯ লাখ ৬১ হাজার ৭২০ টাকা প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন। তবে অন্যান্য গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া টাকাসহ কোটি কোটি টাকা আঁখি সুপার শপ কর্তৃপক্ষ আত্মসাৎ করেছে বলে তাদের অভিযোগ।

এদিকে, আঁখি সুপার শপের প্রতারণার ফাঁদে পড়া গ্রাহকরা এখন অনিশ্চয়তায় দিনাতিপাত করছেন। তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গত ২৭ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে গিয়ে সেটি তালাবদ্ধ দেখতে পেয়ে প্রতারিত গ্রাহকরা বিক্ষোভ করেন। এছাড়া গত শনিবার (১ জানুয়ারি) বটেশ্বর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন গ্রাহকরা।

গ্রাহকদের অভিযোগ,২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা করে আসছে আঁখি সুপার শপ। এর বাইরে বটেশ্বরে নিজস্ব কার্যালয়েও তারা ব্যবসা পরিচালনা করতো। বিভিন্ন সময়ে তারা অফারের মাধ্যমে কম দামে বা একটি কিনলে আরেকটি পণ্য ফ্রি দেওয়ার ঘোষণা দিত। অফারে অংশ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কিছু গ্রাহক ফ্রি পণ্য পেয়েছেন। এতে অন্যান্য গ্রাহকের আস্থা অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি। এই আস্থাকে কাজে লাগিয়ে তারা মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্য একটি কিনলে আরেকটি ফ্রি দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালায়। আগে কিছু গ্রাহক ফ্রি পণ্য পাওয়ায় এবার মোটরসাইকেল কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন অন্যান্য গ্রাহকরা। কয়েকশ’ মোটরসাইকেলের অর্ডার পায় আঁখি সুপার শপ কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে তারা ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে।