আমীরুল মোমেনিন
ঢাকা: আন্তঃ ব্যাংক মুদ্রাবাজারে আবার বাড়ছে ডলারের দর। বৃহস্পতিবার দর ছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। রবিবার আরও ২০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৮৬ টাকা। মুদ্রাবাজারে এ যাবতকালে এটাই সর্বোচ্চ দর মার্কিন ডলারের।
পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৫ মাসে ডলারের বিপরীতে টাকা দর হারিয়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা। আন্ত ব্যাংক মুদ্রা বাজারে প্রায় এক বছর দর স্থির ছিল ডলারের। এ সময়ে লেনদেন হয়েছে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায়। গত জুলাইশেষে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি ঘোষণার পর থেকে দর বাড়তে শুরু করে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে দর উঠে ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। এই দর স্থির ছিল প্রায় এক মাস। তা আবার বাড়তি।
গত ২৯ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি ঘোষণাতে কিছুটা সম্প্রসারণমূলক ভঙ্গির কথা জানায় এবং গত ৩ আগস্ট থেকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। বাড়তে বাড়তে ৮৫ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠার পর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ওই দর একই ছিল। এখন তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। রবিবার মুদ্রাবাজারে দর ছিল ৮৬ টাকা। এই হিসেবে ৫ মাসে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা ১ দশমিক ৪১ শতাংশ দর হারিয়েছে।
মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় বাড়ছে আমদানি ব্যয়। আমাদের অর্থনীতি বেশির ভাগ আমদানিনির্ভর, এ কারণে টাকার মান কমে যাওয়ার সরাসরি প্রভাব পণ্যের মূল্যের ওপর পড়ে। এতে এক দিকে যেমন পণ্য মূল্য বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব পড়ছে, অপর দিকে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে।
ব্যাংকগুলোর চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রচুর ডলার বিক্রি করছে । রবিবার ২ কোটি (২০ মিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের রবিবার পর্যন্ত (২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে রবিবার পর্যন্ত) সব মিলিয়ে ২৫০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর কাছে বাংলাদেশ ব্যাংক যে দরে ডলার বিক্রি বা কেনে তাকে আন্তঃব্যাংক লেনদেন ব্যাংক দর বলে। ব্যাংকগুলোও একে অন্যের কাছ থেকে এই দরে ডলার কেনাবেচা করে থাকে। চাহিদা বাড়ার সুযোগ নিয়ে ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রি করছে এই দরের চেয়ে ৩-৪ টাকা বেশি দামে ।
ডলার ও টাকার বিনিময় হার স্বাধীনতার পর থেকে সরকার নির্ধারণ করে দিত। টাকাকে রূপান্তরযোগ্য ঘোষণা করা হয় ১৯৯৪ সালের ২৪ মার্চ। আর ২০০৩ সালে এই বিনিময় হারকে করা হয় ফ্লোটিং বা ভাসমান। এর পর থেকে আর ঘোষণা দিয়ে টাকার অবমূল্যায়ন বা পুনর্মূল্যায়ন করা হয় না।