মহিউদ্দিন ভোলা, ভোলা থেকে: করোনা মহামারির নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিস্তার রোধে ১১ দফা বিধিনিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বিধি নিষেধের প্রথম দিন থেকেই সরকারি সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায়।
সরকারি নির্দেশনা মানতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোন তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ভোলায় রাস্তাঘাটে, দোকান-পাটে, যাত্রীবাহী বাস কিংবা লঞ্চে অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। নেই সামাজিক দূরত্বও। ধারণ ক্ষমতারও বেশী যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও বাস। মুখে পরছে না মাস্ক।
ভোলা সদর উপজেলার সদর রোড, যুগিরঘোল, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট ও ভেদুরিয়া লঞ্চ ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সেসব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই। ভেদুরিয়া লঞ্চ ঘাটে যাত্রীবাহী
ভোলা-বরিশালগামী লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি তো দূরের কথা যাত্রীদের চাপে ভাড়া আদায়কারী কেরানীদের হিমশিম খেতে দেখা যায়। ভোলা-বরিশাল নৌ রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বও। অধিকাংশ যাত্রীদের মুখে ছিল না মাস্ক।
লঞ্চের যাত্রী মুজিযা রহমান পূণ্য ও আনোয়ার হোসেনসহ সাধারণ যাত্রীরা জানান, ভোলা থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে ভোলার ভেদুরিয়া লঞ্চ ঘাট ছেড়ে গেছে যাত্রীবাহী মেঘদূত-১ লঞ্চটি। এর মধ্যে বহু যাত্রী লঞ্চে বসার জায়গা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়েই মেঘদূত-১ লঞ্চে চড়ে ভোলা থেকে বরিশাল গেছেন। ওই লঞ্চের অধিকাংশ যাত্রীর মুখে ছিল না মাস্ক। এমনকি লঞ্চ স্টাফদের মুখেও মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। মানা হয়নি কোন স্বাস্থ্যবিধি। ফলে করোনার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ভোল-বরিশাল নৌ রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চ মেঘদূত-১ এর কেরানী সুভাষ চন্দ্র দে বলেন, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চালানোর নির্দেশনা আমরা এখনো পাইনি। এ ধরনের নির্দেশনা পেলে তখন হয়তো যাত্রী ভাড়াও বাড়ানো হতে পারে।
কেরানীর এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ওই লঞ্চের কয়েক জন যাত্রী বলেন, লঞ্চের ভাড়া তো আগে থেকেই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যাত্রীরা আরও বলেন, ভোলা থেকে বরিশাল পর্যন্ত মাত্র ৮০ কিলোমিটার নৌ পথের ভাড়া আগে ছিল ৮০ টাকা। আর এখন সেই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১২০ টাকা।
এ ব্যাপারে ভেদুরিয়া এলাকার এক রিকশা চালক মোসলেহ উদ্দিন বলেন, মাস্ক অনেক পরেছি। আর পরতে মন চায়না। তিনি প্রশ্ন করেন আর কত মাস্ক পরমু ?
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ভোলা বন্দর ও পরিবহনের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, অফিস থেকে এ ধরনের কোন কিছু এখনো পাইনি।
ভোলা সদর উপজেলার অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও রিকশা চালকরা মুখে মাস্ক না পরেই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোন চিঠিপত্র পাননি বলে জানালেন ভোলা জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আমরা অচিরেই মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারণ, সরকারি নির্দেশনাতেই বলা আছে যে, মাস্ক না পরলে শাস্তির ব্যবস্থা আছে।