বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
রবিবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের প্রাক্তন প্রধান টি জ্যাকব বললেন, খুব সম্ভবত এখন দু’টি অতিমহামারী একইসঙ্গে চলছে। একটি কোভিড, অন্যটি ওমিক্রন। কোভিডের যে ভ্যারিয়ান্টে এখন বেশিরভাগ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তার নাম ডেল্টা।
ওমিক্রন সম্পর্কে সম্প্রতি যা জানা গিয়েছে, তার ভিত্তিতে ভাইরোলজিস্ট জ্যাকব বলেন, উহান থেকে যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল, তার থেকে ওমিক্রনের জন্ম হয়নি। অর্থাৎ উহান-ডি৬১৪জি, আলফা, বিটা, গামা, ডেল্টা, কাপ্পু বা মু ভ্যারিয়ান্ট থেকে ওমিক্রন মূলগতভাবে আলাদা। কীভাবে ওমিক্রন সৃষ্টি হল তা এখনও জানা যায়নি। কিন্তু তার সঙ্গে উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের ক্ষীণ সম্পর্ক থাকতে পারে।
জ্যাকবের কথায়, “কোভিড ১৯ অতিমহামারী যে পথ ধরে এগোচ্ছিল, তার থেকে ভিন্ন পথ ধরে এগোচ্ছে ওমিক্রন। আমাদের মনে হয়, এখন দু’টি অতিমহামারী চলছে। একটির মূলে আছে ডেল্টা ও তার থেকে উদ্ভূত নানা ভ্যারিয়ান্ট, অন্যটির মূলে আছে ওমিক্রন। তা থেকে আগামী দিনে অন্যান্য ভ্যারিয়ান্টের উৎপত্তি হবে।”
কোনও ব্যক্তি ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা, তা কেবল জিনোম সিকোয়েন্সিং করেই জানা যাচ্ছে। সাধারণত কোভিডে আক্রান্ত হলে কারও দেহে যে উপসর্গ দেখা যায়, ওমিক্রনের উপসর্গ তার থেকে অনেকাংশে আলাদা। জাকব বলেন, সাধারণ করোনাভাইরাস শ্বাসনালীতে সংক্রমিত হয়। কিন্তু ওমিক্রন সংক্রমিত হয় গলায়। তাঁর মতে মেট্রো শহরগুলিতে ওমিক্রন সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছবে খুব তাড়াতাড়ি।
সম্প্রতি জন বেল নামে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের এক অধ্যাপক বলেছেন, কোভিডের অন্যান্য স্ট্রেন যে অসুস্থতার জন্ম দিচ্ছিল, ওমিক্রন তা দিচ্ছে না।
২০২১ সালের নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবার ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্টের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রথমে ভাবা হয়েছিল, তা কোভিডের কোনও দুর্বল ভ্যারিয়ান্ট। ওই ভ্যারিয়ান্ট রোগীর দেহে মৃদু সংক্রমণ ঘটায়। অনেকে ভেবেছিলেন, ওমিক্রনের মধ্যে দিয়েই কোভিড অতিমহামারীর শেষের শুরু হল। কিন্তু পরবর্তীকালে ওমিক্রন যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তা মোটেই দুর্বল ভ্যারিয়ান্ট নয়। তবে ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নেওয়া মানুষের শরীরে তা মৃদু উপসর্গ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা অতিমহামারীর পরের পর্বে হয়তো ওমিক্রন থেকে এক বা একাধিক বিপজ্জনক ভ্যারিয়ান্টের সৃষ্টি হবে।