Home সারাদেশ করতোয়ার হাজীরঘাট দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

করতোয়ার হাজীরঘাট দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

জীবনের ঝুঁকি নিযে এভাবে পারাপার করতে হয়।
মোঃ শাকিল মিয়া, গাইবান্ধা থেকে: সরকার আসে সরকার যায়। ভোট আসলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ব্রিজ নির্মাণের। কিন্ত  কথা রাখেনি কেউ। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছরেও করতোয়ার হাজীরঘাটে নির্মাণ হয়নি একটি ব্রিজ। ফলো লাখো মানুষের পারপারে একমাত্র ভরসা ডিঙ্গি নৌকা।
সম্প্রতি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী করতোয়া নদের হাজীরঘাট এলাকায় দেখা যায় ডিঙ্গি নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শতশত মানুষের যাতায়াতের দৃশ্য। এসময় কেউ মোটরসাইকেল আবার কেউ কেউ বাইসাইকেল ও মালামাল নিয়ে নৌকাযোগে পার হচ্ছিলেন নদের ওপারে।
 দিনাজপুর-গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার সীমানাবর্তী করতোয়া নদের হাজীরঘাট নামক স্থান থেকে নৌকাযোগে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশা-শ্রেণির লাখো মানুষ পারাপার হয়ে থাকেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
সময়ের ব্যবধানে উন্নয়নে সমাজ তথা দেশের পরিবর্তন ঘটলেও আজও উন্নয়নে পরিবর্তন হয়নি লাখো মানুষের পারাপারের বৃহত্তর এই হাজীরঘাটের।  কোন সরকারের আমলেই নজরে আসেনি ওইস্থানে ব্রিজ নির্মাণে।
নদের এপারে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী আর ওপারে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট। মাঝামাঝি দ্বি-সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদের হাজীরঘাট। এই হাজীরঘাট দিয়ে প্রতিনিয়ত খেয়া পারাপার হচ্ছে প্রায় কয়েক শতাধিক গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সর্ববস্তরের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা অবহেলিত এই হাজীরঘাটের ডিঙ্গি নৌকা। এ হাজীরঘাট থেকে দক্ষিণে ঘোড়াঘাটের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। উত্তরে পশ্চিম রামচন্দ্রপুর হয়ে রংপুরের পীরগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। আর পূর্বদিকে পলাশবাড়ী উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার।
এই ঘাট দিয়ে  ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে থাকেন। আর পরিবার পরিজনরা থাকেন উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠার মধ্যে। বর্ষা মৌসুম এলেই নদের কানায় কানায় ভরে গেলে বেড়ে যায় আরও দুর্গতি। এছাড়াও এই ঘাট দিয়ে বাইসাইকেল, মোটর সাইকেল, অটো-চালিত ভ্যান, মাল বোঝাই ভ্যানসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য কৃষকরা তাদের ফসল বিক্রয়ের জন্য বৃহত্তর হাটবাজারগুলোতে যাতায়াত করে থাকেন। বর্ষা মৌসুমে ভরা নদীর অথৈ পানিতে খেয়া পারাপারে আধা ঘণ্টার স্থলে এক ঘণ্টা লেগে যায়।
 ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক সময় বঞ্চিত হয় ক্লাস থেকে। বঞ্চিত হয় সাধারণ ব্যবসায়ীরা কর্ম থেকে। এখানে ব্রিজটি নির্মাণে ভোটের আগে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও  তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এমনই ভাবে ব্রিজের অভাবে যুগযুগ ধরে চলে আসছে এ ভোগান্তি। সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী এই গুরুত্বপুর্ণ স্থানে করতোয়া নদের ওপরে দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ হওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। হাজীরঘাটে এই ব্রিজটি নির্মাণ হলে  স্বল্প খরচে অল্প সময়ে ঘোড়াঘাট দিয়ে দিনাজপুর এবং রংপুরের পীরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ যাতায়াত করতে পারবে
কিশোরগাড়ী ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম সাংবাদিককে জানান, ব্রিজটি নির্মাণ হলে লেখাপড়া, ব্যবসা বাণিজ্যসহ কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রসার ঘটবে। সেই সাথে দীর্ঘদিনের দাবী বাস্তবায়ন হলে এই এলাকার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। তাই ব্রিজটি হওয়া অত্যান্ত জরুরি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান নয়ন  জানান, এই হাজীরঘাট স্থানে ব্রিজ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেলে কাজ করা হবে।