মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন, হিলি ( দিনাজপুর) থেকে: প্রতিশ্রুতি মিলেছে বহুবার, বছরের পর বছর পেরিয়ে গেছে আশায় আশায়। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাধীনতার পর ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও তুলশী গঙ্গা নদীর উপরে হয়নি সেই কাঙ্খিত সেতু। তাই অনেকটাই জনপ্রতিনিধিদের ওপর অভিমান করে ২শ ফুট একটি কাঠের সেতু তৈরি করে স্থানীয়রা। সেটিও এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে আরো বিপাকে পড়েছে উপজেলার ছোট আলীহাট, বাঁশমুড়ি, কাশিয়াডাঙ্গা সহ আট গ্রামের মানুষ। প্রতিশ্রুতি নয় এবার দ্রুত একটি সেতু বাস্তবায়নের দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকেই তুলশীগঙ্গা নদী পারাপারে নৌকা ব্যবহার করেন বাঁশমুড়ি, ছোট আলীহাট ও পাঁচবিবি, ঘোড়াঘাট উপজেলার কয়েক হাজার বাসিন্দা। কিন্তু নৌকায় নদী পাড়ি দিতে গিয়ে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা সেই নদীতে একটি সেতু করে দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন। জনপ্রতিনিধিরা সেতু করে দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন বারবার। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও হয়নি সেই সেতু। সেতুটি নির্মাণ হলে উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত সুবিধা হবে। সেই সাথে ফিরবে এলাকার মানুষের জীবন জীবিকার সুবিধা।
আমজাদ হোসেন নামে স্থানীয় একজন বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই এই নদীর ওপর সেতু বানিয়ে দেয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। নির্বাচন এলেই এমপি-চেয়ারম্যানরা বলেন সেতু করে দেবেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেতুর কোনো হদিস নেই। বাংলাদেশের প্রতান্ত এলাকায় রাস্তা-ঘাট ও সেতু হয়েছে, কিন্তু এখনও একটি সেতুর অভাবে কাঠের সাঁকো দিয়ে পার হতে হয় নদীর দুই পাড়ের মানুষজনদের। সেটাও আবার এখন প্রায় নষ্ট।
আলীহাট ইউনিয়নের কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সেতু না থাকার কারণে মাথায় করে মালামাল নিয়ে সাঁকো পার হতে হয়। যদি সেতু থাকত তাহলে আর এমন কষ্ট থাকত না। দ্রুত একটি সেতু করে দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় আহম্মেদ আলী জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই এই নদীর ওপর সেতু হবে, হচ্ছে বলে আশায় বুক বেঁধে আছেন ইউনিয়নের লাখো মানুষ। সেতুর অভাবে মানুষজন অনেক কষ্ট করে নদী পার হয়। অনেক সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। মাঝে-মধ্যে যখন এই সাঁকো ভেঙে পড়ে তখন মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। মানুষের এই দুর্ভোগ লাঘবে অনতিবিলম্বে একটি সেতু করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
আলীহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান বলেন, এই ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের মানুষের দুঃখ দূর করতে তুলশীগঙ্গা নদীর ওপর সেতু করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে আমরা বারবার যোগাযোগ করছি। আশা করছি দ্রুত এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন বলেন,আমাদের হাকিমপুর উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নের তুলশীগঙ্গা নদীর উপর সেতু নির্মানের জন্য বিভিন্ন সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন তা বাস্তবায়ন হয়নি।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর এ আলম বলেন, আলীহাট ইউনিয়নের মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা চিন্তা করে তুলশীগঙ্গা নদীর উপরে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য প্রক।ল্প উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সেতু নির্মান কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।