জানুয়ারিতে রাজস্ব আদায় ৪৩ কোটি টাকা
মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন, হিলি ( দিনাজপুর) থেকে: হিলি স্থলবন্দরে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা। যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ কোটি টাকা বেশি।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিলি কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার কামরুল ইসলাম।
ব্যবসায়ীরা মনে করেন যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে পণ্য আমদানির পাশাপাশি সরকারেরও বন্দর থেকে আরো বেশী আয়ের সুযোগ হবে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে এই বন্দরে গড়ে প্রতিদিন ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করতো ১৬০ থেকে ১৮০টি। বছরের শুরুতে জানুয়ারী মাসে প্রবেশ করেছে ২৫০ থেকে ২৮০টি ট্রাক।
হিলি স্থলবন্দরের শ্রমিক সর্দার গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘এই বন্দরে আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে তাই শ্রমিকদের কাজের পরিমাণও অনেক বেড়ে গেছে। সরকারি বিধিনিষেধ অনুযায়ী বন্দরে শ্রমিরা লোড-আনলোডের কাজ করছে। সব শ্রমিকদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি কারক শাহিনুর রেজা শাহিন বলেন, ‘বন্দরের অবকাঠামো কিছুটা বৃদ্ধির কারণে ভারত থেকে আমদানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে আমরা আগের চেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করছি। তবে যদি সরকার হিলির অবকাঠামো গুলো আরও উন্নত করে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো করে তাহলে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।’
হিলি পানামা পোর্ট লিংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহারব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যেও এই বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এখানে সব কার্যক্রম চলছে। বর্তমান এ বন্দরে প্রতি দিন ২৫০ থেকে ২৬০টি ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশ করছে।’
হিলি আমদানি-রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, ‘হিলি বন্দরের বেশকিছু সমস্যা আছে। এখানকার রাস্তা-ঘাট সরু, জরাজীর্ণ এবং ভাঙাচোরা অবস্থায় আছে। সরকার যদি এসব সমস্যার সমাধান করে তাহলে এ বন্দরে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে স্বস্তি পাবে। পূর্বের তুলনায় এই বন্দরে আমদানি বেড়ে গেছে। ভবিষ্যতে তা আরো বৃদ্ধি পাবে তবে আগে বন্দর সড়কের উন্নয়ন হওয়া প্রয়োজন। আমরা আশাবাদী সড়ক সমস্যার অবসান হলে এ বন্দরে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ পণ্যবাহী ভারতীয় গাড়ি আসতে পারবে। সরকারের রাজস্বও অনেক গুণে বেড়ে যাবে।’
হিলি কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জানুয়ারি) পর্যন্ত হিলি কাস্টমসে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১৭৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থ (২০২১-২০২২) বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৩৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে এ বন্দর থেকে।
এছাড়া ২০২০-২১ অর্থ বছরে (জুন থেকে জুন) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩১২ কোটি টাকা, আদায় হয়েছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৭ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৩৮ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে রাজস্বর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ কোটি টাকা।
তিনি আরও জানান, ২০২১-২২ অর্থ বছরের আরও ৫ মাস বাকি আছে। আশা করছি গত অর্থ বছরের চেয়ে এ বছর বেশি রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।