বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
বাপ্পি লাহিড়ির মা-বাবা তাঁর নাম রেখেছিলেন অলকেশ। ১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্মেছিলেন তিনি। ছোট্ট ছেলেটা তিন বছর বয়স থেকেই তবলা বাজাত। তবলার সঙ্গে ছিল তার হৃদয়ের সম্পর্ক। বাড়ির পরিবেশও গানের সুরে ভরপুর ছিল। তাই ছোট থেকেই গানের জগতে মন বসেছিল বাপ্পির।
ছোট থেকেই তবলা বাজাতে দারুণ ভালবাসতেন। তাঁর বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরী লাহিড়ি দুজনেই ছিলেন গানের জগতের মানুষ। গানের সঙ্গে তাই ছোট থেকেই পরিচিত বাপ্পি। শুধু তাই নয়, স্বয়ং কিশোর কুমার সম্পর্কে বাপ্পি লাহিড়ির মামা।
এহেন গানের পরিবেশে সুরের সাধনায় উত্তরবঙ্গে বড় হয়ে উঠেছেন অলকেশ লাহিড়ি। ১৯ বছর বয়সে মুম্বই পাড়ি দেন তিনি। সেখানেই গড়ে তোলেন চোখ ধাঁধানো কেরিয়ার। বলিউডে একের পর এক দুরন্ত গান বানিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। শুধু বলিউড নয়, দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক পরিসরেও বাপ্পি লাহিড়ি ছিলেন সমান জনপ্রিয়। বাপ্পি লাহিড়ির অনুরাগীরা কেউ কেউ বলেন সুরকার না হলে তবলা বাজাতেন তিনি, তবলাতেই কেরিয়ার গড়তেন।
মুম্বইতে গিয়েই ‘বাপ্পি’ নাম নেন অলকেশ। সেই নামেই তাঁর ভুবনজোড়া খ্যাতি। আশি-নব্বইয়ের দশকে সুরে, গানে বলিউডে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন বাপ্পি। তাঁর ‘ডিসকো ডান্সার’ গানের তালে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর পায়ে পায়ে যেন আজও নেচে ওঠেন সকলে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে আজও সেই গান বাজতে শোনা যায়, শুধু রইলেন না গানের কারিগরটি।
শুধু তো ডিসকো ডান্সার নয়, ‘চলতে চলতে’, ‘উলালা উলালা’, ‘ইয়াদ আ রাহা হ্যায়’, ‘রাত বাকি বাত বাকি’, ‘জাওয়ানি জানে মন’ বলিউডকে একাধিক সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন বাপ্পি লাহিড়ি।
সোনার জিনিসের সঙ্গে প্রাণের সম্পর্ক ছিল বাপ্পির। বলতে গেলে তাঁর মাথা থেকে পা পর্যন্ত ছিল সোনায় মোড়া। সোনার গয়না পরতে খুব ভালবাসতেন তিনি। বলিউডে তাঁকে ‘গোল্ড ম্যান’ বলেও চিনত লোকে। চোখের সানগ্লাস থেকে শুরু করে গলার হার, হাতের বালা সবেতে ছিল গুচ্ছ গুচ্ছ সোনা।
মুম্বইয়ের হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন সকলের প্রিয় বাপ্পি লাহিড়ি। তাঁর মৃত্যুতে দেশজোড়া শোকের আবহ। ৬৯ বছর বয়সেই থেমে গেছে ডিসকো কিংয়ের জীবনদৌড়।