পাহাড়ে কমেছে বিষের চাষ, বাড়ছে ভুট্টার আবাদ

কৃষকরা জানান, পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও মাটিরাঙ্গা, বান্দরবানের লামা ও আলীকদমে ব্যাপকভাবে চাষ হতো ক্ষতিকর তামাক। দিনদিন মানুষ যতোই সচেতন হচ্ছে ততোই বুঝছে এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর । ব্যাপক চাষের কারণে  গড়ে উঠেছে বড় বড় তামাক ক্রয় কেন্দ্র।

তবে গেল কয়েকবছর যাবৎ টানা তামাক চাষের কারণে উৎপাদন কমে আসায় আস্তে আস্তে কৃষকরা নিরুৎসাহিত হয়ে তামাক ছেড়ে ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। মানুষ, গবাদিপশু, পাখির খাদ্য এবং জ্বালানি হিসেবে প্রতিনিয়ত ভুট্টার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় এ অঞ্চলে বাড়ছে ভুট্টার চাষাবাদ।

কৃষি বিভাগ বলছে, তামাক চাষের জমিতে অন্য ফসল সময়মতো চাষ করা যায় না। তামাক চাষের জন্য প্রয়োজন অধিক উর্বর জমি। রবিশস্যের জন্য আর সেই জমি উর্বর থাকে না। শেষ পর্যন্ত ফসলি জমির হার ক্রমান্বয়ে কমতে কমতে প্রান্তিকে চলে যায়। তামাক চাষে হচ্ছে প্রকৃতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। কৃষি বিভাগ সে অবস্থা থেকে কৃষকদের বের করার উদ্যোগ নিয়েছে। তাছাড়া তামাক চাষ থেকে ফিরে আসতে চাষীদের মধ্যে সচেতনতা ও প্রণোদনা দেওয়ার কারণে জেলার সবকটি উপজেলাতে ক্রমেই তামাক চাষ কমছে। গত বছর যেখানে জেলায় ৬৩০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিলো সেখানে চলতি বছরে হ্রাস পেয়ে ৫৮০ হেক্টরে নেমেছে।

অপরদিকে, খাগড়াছড়িতে চলতি মৌসুমে ৫৩০ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে। পক্ষান্তরে গত বছর খাগড়াছড়িতে ভুট্টা চাষ হয়েছিলো ৫০২ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪হাজার ৩৩৫মেট্টিক টন।

তামাক কোম্পানীগুলোর নানা প্রলোভনে পড়ে তামাক চাষ করে অনেক লোকসান দিয়েছেন একাধিক চাষী। তারা এখন দেনার দায়ে জর্জড়িত। তাদের মতো অনেক কৃষক তামাক চাষ করে পথে বসার উপক্রম। তামাক চাষ ক্ষতিকর হলেও খাগড়াছড়িতে এটি বন্ধে নেই কোনো সরকারি নির্দেশনা। তারপরও কৃষি জমির উর্বরতা ও ক্ষতি ঠেকাতে এই চাষে নিরুৎসাহিত করেছে কৃষি কর্মকর্তারা।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক ড. মো. শফিউদ্দিন বলেন, তামাক চাষ থেকে ফিরে আসতে চাষীদের  প্রণোদনা দেওয়ার কারণে জেলার ৯টি উপজেলাতে ক্রমেই তামাক চাষ কমছে। অপরদিকে তামাকের বিকল্প হিসেবে ভুট্টা চাষ বেড়েছে৷