Home অন্যান্য রাতের বেলা দুশ্চিন্তা, অহেতুক ভয়

রাতের বেলা দুশ্চিন্তা, অহেতুক ভয়

Adene Sanchez/Getty Images

 

রাতের বেলা অ্যাংজাইটি বা উৎকণ্ঠায় ভোগা আজকালকার দিনে খুবই সাধারণ সমস্যা। মানসিক চাপ পুষে রাখেন অনেকেই, তার থেকেই উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠার জন্ম। রাতে শুয়ে দুশ্চিন্তা, বিনা কারণে টেনশন হয়েই থাকে। একটানা জমাটি ঘুম হয় না অনেকের। নানা চিম্তাভাবনা নিয়ে শুতে গিয়ে রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ভয়ও পান অনেকে। এর থেকেও ‘মেন্টাল ট্রমা’ তৈরি হয়। বেশি মাত্রায় অ্যাংজাইটি থাকলে তার থেকে অনিদ্রা, স্লিপ প্যারালাইসিসের মতো সমস্যাও হতে পারে।

 

Anxiety at Night: Causes, Symptoms, and Treatments

 

রোজই মাঝ রাতে ঘুমটা ভাঙে। চোখ খুলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেন রাত ৩টে। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। গভীর ঘুমে আপনার আশপাশের লোকজন। শুধু আপনারই দু’চোখ খোলা। শরীরেও একটা অস্বস্তি। বুক দুরুদুরু। একটা ভয় যেন চেপে বসে মন ও মাথায়। কী থেকে ভয় তার কারণ বের করা দুষ্কর। কিন্তু ভয় হয়। অত্যধিক চিন্তা থেকে দুশ্চিন্তারা ভিড় করে মাথায়।

রাতের বেলা অ্যাংজাইটিতে অ্যাটাক হয় অনেকের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচণ্ড মানসিক চাপ, কাজের চিন্তা, উৎকণ্ঠা নিয়ে ঘুমোতে গেলে এমন অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে অত্যধিক ভয়ের কারণে বুক ধড়ফড় করার পাশাপাশি, শ্বাসকষ্টও হতে পারে। সাধারণ ভাবে দেখা যায়, ভয়ের কারণে হাত-পা কাঁপতে থাকা, বুক ধড়ফড় করা, বেশি ঘাম হওয়া, গলা শুকিয়ে যাওয়া, বার বার প্রস্রাব পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায় অনেকের। মাথা ঘোরা, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। রাতের বেলা অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হলে বার বার ঘুম ভেঙে যাবে বা ঘুম আসতেই চাইবে না। শরীর ক্লান্ত থাকলেও মস্তিষ্ক এতটাই সজাগ থাকবে যে দু’চোখের পাতা ভারী হলেও নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবেন না।

Anxiety at Night: Keeping Calm and Relaxed | Biotène

অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার নয় তো? প্যানিক অ্যাটাকও হতে পারে

আমাদের ব্রেনের মধ্যে কিছু রাসায়নিকের পরিমাণে তারতম্য দেখা দিলে এমন সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ‘সেরোটোনিন’ ও ‘গাবা’ নামের দু’টি রাসায়নিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ব্রেনের একটি বিশেষ জায়গা ‘লিম্বিক সিস্টেম’ এই রোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।

কিন্তু অকারণ ভয় আমাদের কুরে কুরে খায়। নানা ধরনের দুরারোগ্য জটিল অসুখ দেখা দিতে থাকে। দেখে মনে হয় বয়স বেড়ে গেছে কয়েক বছর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খুব বেশি চিন্তাভাবনা ও স্ট্রেস থেকেই পোস্ট ট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) অথবা জেনারালাইজড অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের (জিএডি বা ‘গ্যাড’) মতো জটিল রোগ দেখা দেয়।

Anxiety symptoms, causes, and treatments: ज्यादा गुस्सा आ रहा है तो गहरी  नींद ले लें, बिना सोए लोगों में 30% तक बढ़ जाता है चिड़चिड़ापन - Jansatta

মন শান্ত হবে কী করে?

অহেতুক চিন্তাদের সহজে টলানো যাবে না। তারা মনে উঁকিঝুঁকি দিতেই থাকবে। তাই মন শান্ত করার জন্য মনের জোর বাড়াতেই হবে। তার জন্য প্রতিদিনের জীবনে কিছু অভ্যাস রপ্ত করতেই হবে।

সবচেয়ে ভাল মেডিটেশন। প্রতিদিন ভোরে ও রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মেডিটেশন করলে মন অনেকটা শান্ত হবে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা এক্ষেত্রে, উদ্বেগ কমানোর জন্য ‘ডিপ ব্রিদিং টেকনিক’, ‘প্রোগ্রেসিভ মাসল রিল্যাক্সেশন’ পদ্ধতির প্রয়োগ করেন।

How To Meditate For Anxiety: 3 Beginner Techniques To Try

বেশি রাত অবধি মোবাইল বা ল্যাপটপ নিয়ে থাকলে ঘুমের দফারফা হয়। মস্তিষ্ক ঠিকভাবে বিশ্রাম পায় না। ফলে বারে বারে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। যদি ঘুম ভাঙার পরে শরীরে অস্বস্তি হয় তাহলে বুঝতে হবে মানসিক চাপ সাংঘাতিক। রাতে শুতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে মোবাইল, ল্যাপটপ সহ সমস্ত ইলেকট্রনিক গ্যাজেট দূরে রাখলে ভাল হয়।

ডায়াবেটিস, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, ফ্যাটি লিভার ও ওবেসিটির সমস্যা থাকে যাদের তারা স্লিপিং ডিসঅর্ডারে ভোগে। ফলে ঘুম আসতে চায় না বা একটানা নিশ্ছিদ্র ঘুম হয় না। তার থেকেও ক্লান্তিভাব, স্ট্রেস বাড়ে।

হেডফোনে দীর্ঘ সময় গান শোনার অভ্যাস আছে অনেকের। রাতে শুয়ে কানে হেডফোনে গুঁজে মনে যতই আবেগ আসুক, চোখে ঘুম সহজে আসবে না। ডাক্তাররা বলেন, হাই-ভলিউমে গান শোনেন যাঁরা, তাঁদের মস্তিষ্কে চাপ পড়ে। মাথা ব্যথা দিয়ে শুরু হয়ে মাইগ্রেনে গিয়ে শেষ হতে পারে। আর ঘুম না এলেই চিন্তারা ভিড় করবে মাথায়। মাঝরাতে টেনশন, প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে।

রাতে ঘুম ভেঙে গেলেওে আপনার সেল ফোনটি ব্যবহার করবেন না। তার থেকে ডিপ ব্রিদিং করুন, ঘুম চলে আসবে।

-সংগৃহীত