হিলি ( দিনাজপুর ) থেকে মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন: ঋতুরাজ বসন্তেই ভারত সীমান্ত ঘেঁষা হিলি বাজারে এসেছে গ্রীষ্মের ফল তরমুজ। অনেকেই তা দেখছেন। তবে বিক্রেতারা বলছেন, বিক্রি তেমন একটা নেই। গাছে আগাম জাতের তরমুজ পরিপক্ক হওয়ায় বাজারে এসেছে। কিন্তু তাপমাত্রা এখনও কম থাকায় বাজারে এখন তরমুজের চাহিদা কম।
৮মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে হিলি বাজারে, আগাম জাতের তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যায়। বিক্রেতা আলম বলেন জয়পুরহাট ফলপট্টি পাইকারি আড়ত থেকে এসব তরমুজ কিনেছেন । খুচরায় প্রতি কেজি তরমুজের দর আকার ভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা হাঁকছেন তিনি।
বাজার থেকে তরমুজ কিনে ফিরছিলেন মাহাবুব ইসলাম। তিনি বলেন, এতো আগাম তরমুজ তো দেখা যায় না। কেনার সময় খেয়ে দেখলাম, স্বাদও খুব একটা ভালো না। তবে আমার বাচ্চা তরমুজ খুব পছন্দ করে। বাজারে নতুন এসেছে দেখে ওর জন্যই কিনলাম।
দর কষাকষি করছেন আরেক ক্রেতা সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে খুব ভালো স্বাদের হবে না। তবুও বাজারে নতুন এসেছে, দেখে লোভ সামলাতে পারছি না। তাই কেনার জন্য দাম করছি। তবে দাম বেশি চাইছে ।
তরমুজ বিক্রেতা আলম বলেন , আমি মৌসুমী ফলের ব্যবসা করি। আগাম জাতের আনারকলি, অলক্লিন , চায়না-২ , এশিয়ান-২ তরমুজ পরিপক্ক হয়ে গেছে। চৈত্র মাসে তরমুজ উঠার কথা হলেও , এখন ফাল্গুনে তরমুজ পরিপক্ব হয়ে গেছে তাই বিক্রি শুরু করেছি।
পুষ্টি বিদদের মতে প্রতি ১০০ গ্রাম তরতাজা তরমুজে খাদ্য উপাদান হলো জলীয় অংশ ৯৫.৮ গ্রাম , আমিষ ০.৫ গ্রাম , আঁশ ০.২ গ্রাম , চর্বি ০.২ গ্রামর, শ্বেসার ৬.৫ গ্রাম , ভিটামিন এ ৫৬৯ মিলিগ্রাম , ভিটামিন সি ৬ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি ১৬ মিলিগ্রাম , শর্করা ৩.৩ গ্রাম , ক্যালসিয়াম ১১ মিলিগ্রাম , ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম , নিয়াসিন ০.১৫ গ্রাম , লৌহ ৭.৯ মিলিগ্রাম , ভিটামিন বি১ ০.০৩ মিলিগ্রাম, বি২ ০.০৪ মিলিগ্রাম।
তরমুজ পুষ্টি গুণে ভরা একটি ফল। ভিটামিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস তরমজু। তরমুজের প্রায় ৯৬ শতাংশই পানি। তাই প্রচন্ড গরমে শরীরে পানির চাহিদা পূরণে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে তরমুজ। যারা গরমে কাজ করে বা বেশী ঘাম হয় তাদের নিয়মিত তরমুজ খাওয়া দরকার। এতে শরীর তাড়াতাড়ি দুর্বল হয় না। তরমুজে যে পটাশিয়াম থাকে তা মানব দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। হৃদপিন্ডের সুস্থতা রক্ষা করে। পুষ্টিবিদদের মতে তরমুজ মানব দেহের হৃদরোগ, হাঁপানী, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) রোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।
উপজেলা কৃষি অফিসার ডঃ মোছাঃ মমতাজ সুলতানা , বলেন হাকিমপুরে ইতিপূর্বে তরমুজের চাষ হলেও এবছর হয় নি । ভোলা , সিরাজগঞ্জ , বরিশাল , সিলেট ,পঞ্চগড় অঞ্চল থেকে তরমুজ আসে। এতে ব্যবসায়ীদের খরচ বাড়ে। এই এলাকায় তরমুজ চাষ সম্প্রসারণের ব্যাপারে তারা উদ্যোগ নেবেন।