শিশু-কিশোরদের মনোবৃত্তি বিকশিত করার জন্য এধরনের বইমেলার আয়োজন সময়ের দাবী
চট্টগ্রাম: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অনেক প্রতিকুলতার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রায় বিশদিন ব্যাপী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিবেদন করে একুশে বইমেলার আয়োজন করে যে সফলতা রেখেছে এতে আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। শিশু-কিশোরদের মনোবৃত্তি বিকশিত করার জন্য এধরনের বইমেলার আয়োজন সময়ের দাবী বলে উল্লেখ করেন বলেন, বই পড়ার জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা গেলে শিশু-কিশোররা আরো বেশী বইমূখি হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সৃজনশীর প্রকাশক পরিষদ, নাগরিক সমাজ, মুক্তিযোদ্ধা, লেখক সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহায়তায় বঙ্গন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলার সমাপনি ও একুশে স্মারক সম্মাননা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেলা পরিষদের আহবায়ক ড. নিছার উদ্দীন আহমদ মঞ্জু।
সম্মানিত অতিথির মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মো. আকরাম খাঁন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন অনেক বদলে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এখন উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছাচ্ছি। আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ধ্বংস করতে একটি মহল নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা এতে সফল হতে পারবে না। তিনি বলেন, কিছু কিছু পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমাদের দেশেও এর প্রভাব পড়েছে। সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সরকার টিসিবির মাধ্যমে এককোটি মানুষকে ন্যয্যমূল্যে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। আশাকরা যায় শিগগির জনসাধারণ এর সুফল পাবে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শত প্রতিকুলতার মাঝে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একুশে বইমেলার আয়োজন করেছে। এতে চট্টগ্রামের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহায়তা ছিল বলেই এ উদ্যোগ সফল হয়েছে। তিনি বলেন, মেলায় পাঠকের সমাবেশ ঘটেছে, তাতে বইয়ের প্রতি পাঠকের যে আগ্রহ বেড়েছে তা সহজেই অনুমেয়। আগামীতে মেলার পরিধি বাড়াতে দক্ষিণ পাশের রাস্তা বন্ধ রাখতে মন্ত্রী যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা আমলে নেয়া হবে বলে জানান।
মো. রেজাউল করিম চৌধুরী আরও বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এই বইমেলার মাধ্যমে তা পরিস্ফুটিত হয়েছে। আগামীতে আরো বড় পরিসরে বাংলা একাডেমির মতো মেলার আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।
প্রধান অতিথি ড. হাছান মাহমুদ একুশে স্মারক সম্মাননা পদক প্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন। এবারে পদক প্রাপ্তরা হলেন-স্বাধীনতা আন্দোলনে আবু ছালেহ, মুক্তিযোদ্ধে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভাষা আন্দোলনে প্রতিভা মুৎসুদ্দি, শিক্ষায় অধ্যাপক আহমদ হোসেন (মরনোত্তর), চিকিৎসায় ডা. আনজুমান আরা ইসলাম, সাংবাদিকতায় আবু সুফিয়ান, সংগীতে ওস্তাদ মিহির লালা, ক্রীড়ায় মো. আকরাম খান, সমাজ সেবায় গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ, প্রবন্ধ গবেষণায় ড. সুনীতিভুষণ কানুনগো, কবিতায় সেলিনা শেলী, শিশু সাহিত্যে এমরান চৌধুরী, কথা সাহিত্যে মহি মাহম্মুদ।
অনুষ্ঠান শেষে ড. নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু রচিত গবেষণা গ্রন্থ ও চসিকের সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা অধ্যাপক মির্জা মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাবুল রচিত শিক্ষা ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা বই দুটির মোড়ক উম্মোচন করা হয়।