বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম:
মার্কেটের মালিক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।তৈরি হয়েছে প্রায় ৮ মাস। কখন দোকান বরাদ্দ হবে তা অনিশ্চিত। আর এর সুযোগ নিয়ে স্থানীয় একটি চক্র জমজমাট ব্যবসা করছে সেখানকার দোকানগুলোর।
চক্রটি দোকানের হাতবদল করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।সে সংবাদ পৌঁছেছে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছেও। এ রকম কেউ যেন না করে সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে বন্দরের এস্টেট বিভাগ।জনৈক আবদুল হাকিম এবং অপর কয়েকজনের চক্রটি এই অবৈধ কারবারে জড়িত।
মার্কেটটির নাম বন্দর মেইন মার্কেট। সেখানে দোকান ছিল ৬৪ টি। বন্দর মেইন মার্কেট সমবায় সমিতির সেক্রেটারি আবুল হাশেম জানান, জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় বন্দর কর্তৃপক্ষ তা ভেঙ্গে আধুনিক মার্কেট তৈরির উদ্যোগ নেয়।
মার্কেট ভাঙ্গার পর আশেপাশে অস্থায়ীভাবে দোকান নিয়ে বসেন পূর্বের মালিকরা। তাদের কয়েকজন জানালেন, ‘আশা করেছিলাম বছর দেড়েকের মধ্যে নতুন মার্কেটে দোকান বরাদ্দ পাবো, পুরোদমে ব্যবসা করতে পারবো। সে ক্ষেত্রে প্রায় ৪ বছর পরও বরাদ্দ না পাওয়ায় পুঁজি-পাট্টা সবশেষ।প্রচুর আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন আমাদের সবাই।বন্দর প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেড় বছরের মধ্যে নতুন মার্কেট তৈরি করে দেয়ার।কিন্তু লেগে গেছে প্রায় ৪ বছর।দফায় দফায় যোগাযোগ করে বন্দরের কাছে থেকে কেবল আশ্বাস মিলেছে অবিলম্বে নতুন দোকান বরাদ্দের।’
নতুন মার্কেটটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা।যাবতীয় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ৮ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, দোকানের সেলামি কত হবে কেবল সেটা নির্ধারণ করতে না পারায় বরাদ্দ দিতে পারেনি।বরাদ্দ না পেয়ে যেমন দোকানিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষও মার্কেটটির আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের ১৪ কোটি টাকার বিনিয়োগ অলস পড়ে আছে কেবল সেলামির হার নির্ধারণে সময় ক্ষেপণের কারণে। অথচ কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যদি এমন একটি মার্কেট তৈরি করতো তাহ’লে নির্মাণ শুরুর আগে দোকান বিক্রি করতো এবং নির্মাণের পর একদিনও অকেজো থাকতো না।
আরও জানা যায়, বন্দর বোর্ড থেকে দায়িত্ব দেয়া কমিটি দোকানের সেলামির হার কত হতে পারে সে সম্পর্কে রিপোর্ট দেয়। যাচাই বাছাই করে সেই হার যৌক্তিক কী না তা নির্ণয়ের জন্য দু’জনের একটি কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।এরপর ৬ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে।দিচ্ছি দেবো করে এভাবে আরও কতদিন সময় লাগবে কে জানে।
যোগোযোগ করা হলে বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ম্যানেজার ( এস্টেট ) জিল্লুর রহমান জানান যে ‘ আমরা চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত মেইন মার্কেটের দোকান বরাদ্দ সম্পন্ন করা যায়।’ তবে আরও কতদিন পর তা সম্ভব হবে সে সম্পর্কে নিশ্চিত কোন কিছু বলতে পারেননি তিনি। অবশ্য তিনি উল্লেখ করেন যে বিষয়টি বন্দর বোর্ড-এর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত আসার পর অবিলম্বে বরাদ্দ করা হবে।
ঐ মার্কেটের দোকানিরা জানান, ভাঙ্গার আগে দোকানের আকার ছিল ৮ ফুট বাই ৮ ফুট। ছোট হওয়ায় কথা ছিল ১০ ফুট বাই ১২ ফুট আকারে নির্মাণ করার। এখন সাইজ করা হয়েছে সাড়ে ৭ ফুট বাই ১১ ফুটের। কবুতরের খোপের মত আকারের দোকানগুলো মোটেও ব্যবসা করার উপযোগী নয়। তবে, এ প্রসঙ্গে বন্দর প্রকৌশল বিভাগ দাবি করেছে দেশের সেরা আর্কিটেক্ট প্রতিষ্ঠান মার্কেটটির ডিজাইন করেছে। তাই দোকানিদের ঐ বক্তব্য সঠিক নয়।