বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
রাতের ঘুম ঠিকঠাক না হলে সারা দিনটাই মাটি। কাজ করতে বসে হাইয়ের পর হাই উঠছে। মাথা ঝিমঝিম। কাজে মনও নেই। মাথা ফাঁকা। এই অবস্থা যাঁদেরই হয় তাঁরা বোঝেন। তবে বাড়ি ফিরেই ঘুমিয়ে নেবেন ভাবলেও আবার দেখা যায় যে কে সেই। কিছুতেই ঘুম আসছে না। ঘুম বিশেষজ্ঞরা জানান, এটা একটা অসুখ, যার নাম ইনসোমনিয়া।
বর্তমানে তুমুল ব্যস্ততার যুগে বিশ্বের বহু মানুষ এই রোগে ভুগছেন। কিন্তু গা করছেন না কেউই। কিন্তু জানেন কি, এই রোগ পুষে রাখলে ক্রমশই আপনার স্মৃতিলোপ পেতে থাকবে, দেখা দেবে আরও নানান শারীরিক জটিলতা? তাই আজই সতর্ক হোন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, শরীর সুস্থ সতেজ রাখতে দিনে ৮ ঘন্টা ঘুম আবশ্যক। কিন্তু আমাদের অনেকেরই তা হয়ে ওঠে না। কারণ একাধিক। হতে পারে কর্মক্ষেত্রে বা ব্যক্তিগত জীবনে অত্যধিক মানসিক চাপ, কিংবা শারীরিক অসুস্থতা। হতে পারে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও। কিন্তু আগামী দিনে সুস্থতার কথা ভেবে একটা সঠিক ঘুমের অভ্যেস গড়ে তোলাই যায়। অবলম্বন করতে পারেন এই সহজ ৬টি উপায়।
১. প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমোতে যান
মনে করে একই সময় ওষুধ খাওয়ার মতো, এই ঘুমের অভ্যেসও ওষুধের মতোই কাজ করতে পারে। প্রতিদিন রাত ১১টার মধ্যে আলো নিভিয়ে ঘুমোতে যান। সকাল ৭টায় অ্যালার্ম দিয়ে উঠুন।
২. ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন
বেডরুম যেন আলুথালু না থাকে। পরিষ্কার চাদর, বালিশে ঘুমোনোর আয়োজন করুন। ঘর একেবারে অন্ধকার বা হালকা আলো আঁধারি থাকুক। কোনওরকম আওয়াজ বা অস্বস্তি যেন বেডরুমে না ঢোকে।
৩. নিয়মিত শরীর চর্চা করুন
আমাদের শরীরে অনেক বাড়তি শক্তি জমে থাকে। সারাদিন উপযুক্ত পরিশ্রম না হলে সেই শক্তি ক্ষয় হয় না, শরীর ক্লান্ত হয় না। কিন্তু ঘুমোনোর জন্য একটু ক্লান্তি যে জরুরি। দিনে যদি অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটেন এবং আধ ঘন্টা ব্যায়াম, প্রাণায়াম বা যোগাসন করেন তাহলেই কিন্তু রাতে ভাল ঘুম হবে।
৪. রাতে শোওয়ার আগে চা-কফি নয়
চা, কফি কিংবা এনার্জি ড্রিংক অনেকসময়ই বেশি খাওয়া হয়ে যায়। তবে এই ধরনের পানীয় ভীষণ ভাবে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। সন্ধের পর এগুলো না খেয়ে বরং হারবাল টি অথবা এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। যা আপনার শরীর থেকে উত্তেজনা কমিয়ে শান্তিতে চোখের পাতা এক করতে দেবে।
৫. ঘুমোনোর আগে গ্যাজেটস দূরে রাখুন
ফোন, ল্যাপটপ নিয়ে আগের মুহূর্ত অবধি নাড়াচাড়া করে গেলে একেবারেই ঘুম আসবে না। ঘুমোনোর তোরজোড় করার অন্তত ১৫ মিনিট আগে সমস্ত রকম গ্যাজেট দূরে সরিয়ে ফেলুন। এগুলো থেকে বের হওয়া রেডিয়েশন এবং স্ক্রিনলাইট ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
৬. যদি একান্তই ঘুম না আসে উঠে ভাল কিছু করুন
এগুলো চেষ্টা করার পরও যদি আপনার ঘুম না আসে তবে জোর করে শুয়ে থেকে এপাশ ওপাশ করার দরকার নেই। উঠে এমন কিছু করুন যা আপনাকে শান্তি দেয়, আনন্দে রাখে। হয়তো দু’পাতা বই পড়লেন, একটু গান শুনলেন। কিন্তু বিছানায় শুয়ে থেকে ঘুম আসছে না কেন সেই ভেবে আবার যেন রাত কাবার করে ফেলবেন না। ঘুম ঠিক আসবে। আসবেই।