Home Second Lead ওমানে জাতীয় টুপির চাহিদা মেটাচ্ছে মহাদেবপুর

ওমানে জাতীয় টুপির চাহিদা মেটাচ্ছে মহাদেবপুর

ছবি সংগৃহীত

 মহাদেবপুর (নওগাঁ ) থেকে এম সাখাওয়াত হোসেন: করোনা ভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে উঠায় পবিত্র ঈদ উপলক্ষে টুপি তৈরীতে আবারো ব্যাস্ত হয়ে উঠেছে মহাদেবপুর উপজেলার কয়েক হাজার নারী। সংসারের কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরী করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এই উপজেলার কয়েক হাজার নারী ।

নওগাঁর মহাদেবপুরের তৈরী টুপি রপ্তানি হচ্ছে সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে গ্রামে গ্রামে টুপিতৈরীতে নারীদের ব্যাস্ত চোখে পড়ার মতো। সারা বছর টুপি তৈরী হলেও পবিত্র ঈদ উপলক্ষে রমজান মাসে বেড়েছে কাজের চাপ। এসব কারিগরদের কাছে মহাদেবপুর উপজেলার খুচরা ব্যবসায়ীরা বিদেশী ব্যবসায়িদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন নকশার ছাপ দেওয়া সাদা রঙের টুপির কাপড় ও সুতা কারিগরদের বাড়ি বাড়ি পৌছে দেন।

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লগডাউন দেওয়াই সবধরণের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পরে। বিদেশী ব্যবসায়িদের চাহিদা বন্ধ হয়ে যাওয়াই টুপি তৈরীর কাজও প্রায় বন্ধ হয়ে পরে । ফলে স্থানিয় খুচরা ব্যবসায়ীরা এ উপজেলার টুপির কারিগরদের কাছে বিদেশী ব্যবসায়িদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন নকশার ছাপ দেওয়া টুপির কাপড় ও সুতা পৌছে দিতে পারছিলনা।

করোনা ভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে ওঠার পর উপজেলার সুজাইল, মাদিশহর, গোশাইপুর, দেবরপুর, শিবরামপুর, রামচন্দ্রপুর, মধুবন, খাজুর, বিলমোহাম্মদপুর, চাঁন্দাশ, রামরায়পুর, চককন্দরপুর, শিবপুর, শিবগঞ্জ, বাগডোব, ডিমজাউনসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কয়েক হাজার নারী টুপি তৈরীতে আবারো ব্যাস্ত হয়ে পরেছে। নিপুন কায়দায় সেলাই ও ভাজ করে কাপড় দিয়ে বানানো এসব টুপি সুইয়ের ফোড়ে নান্ননিক নকশা ফুটে উঠতো এক এক কাপড়ে এক এক রকম টুপি। ইতিমধ্যেই নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার তৈরী টুপি মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলেন।

বিশেষ করে মহাদেবপুর উপজেলা তৈরী টুপি ওমান দেশের জাতীয় টুপির চাহিদা মিটাচ্ছেন। এই উপজেলার টুপি তৈরীর কারিগর তানজিমা, মিলি, মরিয়ম, কল্পনাসহ আরো অনেকেই জানান, তারা অবসর সময়ে টুপি তৈরী করে মাসে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৮শত টাকা আয় করছেন। টুপি তৈরীর বাড়তি আয়ের মাধ্যমে সংসারের ব্যায় মিটানোর পাশাপাশি ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন তারা।

এলাকার অনেক ছাত্রীও এখন লেখাপড়ার পাশাপাশি অবসর সময়ে টুপি সিলাই করে লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন বলেও তারা জানান। টুপির কারিগর মুক্তা জানান, মহাজনরা তাদের টুপি তৈরীর সুতা, কাপড়সহ জাবতীয় কিছু সরবরাহ করেন। সেই কাপড় ও সুতা দিয়ে টুপি সিলাই হলে মহাজনরা এসে নিয়ে জায়। প্রতিটি টুপি সিলাইয়ে ৮০০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা পর্যন্ত মজুড়ি পান। কাজ ও নকশার উপর টাকার পরিমান কমবেশি হয়। একজন নারী তার সংসারের কাজ কর্মের পরও অবসর সময়ে কাজ করে প্রতি মাসে ১ থেকে ২টি টুপি সিলাই করতে পারেন। কেউ কেউ বাড়ির উঠানে বসে টুপি তৈরী করলেও অধিকাংশ নারীরাই দলবদ্ধ ভাবে টুপি তৈরী করেন।

এ বিষয়ে স্থানিয় টুপি ব্যবসায়ী মোঃ জাহেদুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমান জানান,  করোনা ভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে উঠাই এ উপজেলার তৈরী টুপির চাহিদা ব্যাপক বেরেছে। পবিত্র ঈদকে সামরে রেখে বিদেশী ব্যবসায়িদের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়াই এ উপজেলার টুপিতৈরীর নারী কারিগররা আবারো ব্যাস্ত হয়ে পরেছে। মহাদেবপুর উপজেলার তৈরী টুপি রপ্তানি হচ্ছে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে ওমান দেশের জাতীয় টুপির চাহিদা মিটাচ্ছে মহাদেবপুরের তৈরী টুপি । এমনকি করোনার পর বিদেশে মহাদেরপুর থেকে প্রতিমাসে আনুমানিক ১ কোটি টাকার টুপি পাঠানো হয়।