সাপাহার (নওগাঁ) থেকে হারুনুর রশিদ : বিস্তীর্ন মাঠ জুড়ে ঘন সবুজের সমারোহ। দখিনা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে বোরো ধানের কচি শীষ। মাঠের দিকে তাকাতেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। সবুজ সমুদ্রের ঢেউয়ে যেন দুলে উঠছে প্রকৃতি। বোরো ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। এমনটাই দৃশ্য চোখে পড়বে নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা সাপাহারের মাঠগুলোতে।
সরেজমিনে বোরো ধানের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ধান গাছের সবুজ পাতা ও কাঁচা শীষ তরতাজা রয়েছে। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই শীষে দুধ-দানা গঠন শুরু হবে । যথাসময়ে সঠিক পরিচর্যা ও জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে বোরো ধানের মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। আর কয়েকদিন পরেই ধানের সবুজ গাছ এবং কাঁচা শীষ হলুদ বর্ণ ধারণ করবে। এরপর সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ। মাঠ ভরা ফসলে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠবে আনন্দের ছোঁয়া। রাশি রাশি সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষাণীর শূন্য গোলা।
বোরো মৌসুমকে ঘিরে স্বপ্ন দেখে এ অঞ্চলের অনেক চাষী। এবছর মৌসুমের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ভালো ছিল। ছিলনা সার, বীজ ও বালাইনাশকের সংকট। সময়মত জমিতে সব কিছুই প্রয়োগ করা হয়েছে। জমিতে সবল-সতেজ চারা এবং শীষ বের হচ্ছে। তাই এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি বোরো মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলার কলমুডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর বলেন, এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের অবস্থা বেশ ভালো আছে। যার ফলে বাম্পার ফলনের আশাও করছেন তিনি।
বাখরপুর গ্রামের কৃষক নুহু ইসলাম (পারুল) বলেন, মৌসুমের শুরু থেকে সার ও কীটনাশক চাহিদা মতো পাওয়ায় কোনরূপ সমস্যা হয়নি। যার ফলে আমরা সঠিক পরিচর্যা করতে পেরেছে। এবছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ৬ ইউনিয়নে বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে ৬ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে। এবছর বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ২২ হাজার ২৪৮ মেট্রিক টন।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাপলা খাতুন জানান, বোরো ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। মাঠে ধানের অবস্থা ভাল দেখা যাচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি এবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে।