বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
নোয়াখালী: বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে বাবার কোলে থাকা শিশু জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়াকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি মো: রিমন ওরফে শুটার রিমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। ৩ নং আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: তৌহিদুল ইসলাম আসামি রিমনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত জবানবন্দি রেকর্ডের পর আদালতের নির্দেশে আসামিকে নোয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর মো: সবজেল হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আসামি রিমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রিমান্ডে নেয়া আসামিরা হলেন- সুজন, ,সোহেল উদ্দিন, নাইমুল ইসলাম ও আকবর হোসেন।
বৃহস্পতিবার নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে চার আসামির সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত চার আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-ডিবি) সাইফুল ইসলাম চার আসামির রিমান্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তার আগে গত মঙ্গলবার রাতে হত্যাকাণ্ডের মুল হোতা সন্ত্রাসী রিমনসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১।
ঘটনার তিন দিন আগে রিমন ২১ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্র ক্রয় করেছিল বলে র্যাবের কাছে স্বীকারোক্তি দেয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নোয়াখালী র্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, তাসফিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি রিমন (২৩) ও তার সহযোগী সোহেল উদ্দিন (২৪), সুজন (২৬), নাইমুল ইসলাম (২১) এবং আকবর হোসেনর (২৬) অবস্থান নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার রাতে জেলার সুবর্ণচরের চরক্লার্কে অভিযান চালায় র্যাবের একটি দল। এ সময় ওই সন্ত্রাসীরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে র্যাবও পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পিছু হটার চেষ্টা করলে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি গোলাবারুদ, একটি পিস্তল, একটি পাইপগান ও ছয় রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল বুধবার বিকেলে বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৪নং হাজীপুর ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের রাসেদ মিয়ার বাড়ির মৃত জানু সরদারের ছেলে সৌদি প্রবাসী মাওলানা আবু জাহের (৩৭) তার তিন বছর বয়সের শিশু মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তাসফিয়াকে কোলে নিয়ে স্থানীয় মালেকার বাপের দোকানে চিপস কিনে দেয়ার জন্য আসে। এ সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী রিমনের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে গুলি চালায়। এতে মাওলানা আবু জাহের ও তার কোলে থাকা শিশু জান্নাতুল ফেরদৌস তাসফিয়া গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জান্নাতুল ফেরদৌস তাসফিয়ার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা নেয়ার পথে রাত ৯টায় জান্নাত মারা যায়।