Home First Lead বড় ৬ প্রতিষ্ঠান ৬৫ টাকার চাল বিক্রি করছে ৮৫ টাকায়

বড় ৬ প্রতিষ্ঠান ৬৫ টাকার চাল বিক্রি করছে ৮৫ টাকায়

ছয়টি প্রতিষ্ঠান ব্যাগিং করে একই চাল যেটা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা পড়ছে, সেটা প্যাকেটজাত করে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় কেজি বিক্রি করছে। অথচ প্যাকেট করতে লাগে মাত্র ৩ টাকা ।

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: বুধবার সচিবালয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেও বাজার মনিটর করছেন। যারা চাল মজুত করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের কেউ হলেও তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি জানান, এসিআই, স্কয়ারসহ ছয়টি গ্রুপের চালের মজুত পাওয়া গেছে। স্কুলের শিক্ষকদের কাছেও চালের মজুত পাওয়া গেছে। আমি কোনো চালের ব্যবসা করি না, এটা স্পষ্ট।

তিনি বলেন, যারা মজুতদার তাদের কোনো দল নেই। মজুতদাররাই আলাদা একটা দল। আমি তো নির্দেশ দিয়েছি ১৯৭৪ এর স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টে মজুতদারদের বিরুদ্ধে মামলা করতে।

দেশে চালের কোনো সংকট হবে না উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, যদি হয় তাহলে আমদানি করতে হতে পারে। প্রয়োজনে শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানি করে ভোক্তাকে স্বস্তিতে রাখা হবে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বোরোর ভরা মৌসুমে চালের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই, কিন্তু কেন চালের দাম বাড়ছে? এটা ব্যবসায়ীদের কারসাজি।

মন্ত্রী বলেন, ছয়টি প্রতিষ্ঠান ব্যাগিং করে একই চাল যেটা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা পড়ছে, সেটা প্যাকেটজাত করে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি করছে। একই সঙ্গে আগাম টাকা মিলারদের দিয়ে আসছে, এমনকি প্যাকেটও দিয়ে আসছে নওগাঁ, দিনাজপুর, বগুড়া ইত্যাদি স্থানে। তিনি বলেন, একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, এই যে বিপুল পরিমাণ চাল যখন এরা তুলে নিচ্ছে, প্যাকেট করতে লাগে তিন টাকা, বিক্রি করছে ১০ টাকা ১৫ টাকা বেশি দামে। এর জন্য তাদের বেশি দামে কিনে আনতেও সমস্যা নেই। এ কারণে যারা এদের কাছে চাল বিক্রি করছে তারা বাজারের ধানটাও প্রতিযোগিতা করে কিনছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের বাজার থেকে চাল কিনে প্যাকেটজাত করে তা আবার বিক্রি করা যাবে না। এজন্য একটি সাকু‌র্লার জারির চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

অবৈধ মজুতদারদের ধরতে এখন সারা দেশে অভিযান চলছে জানিয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দিনাজপুরে দেশের বড় একটি শিল্প গ্রুপের মিলের যে পাক্ষিক ক্ষমতা দেওয়া আছে সর্বোচ্চ এর তিন গুণ তারা মজুত করতে পারবে। একটি বাজারে যাবে, একটি উৎপাদনে যাবে, আরেকটি মজুত থাকবে। সেটার পরও প্রায় ৫ হাজার টন চাল উদ্বৃত্ত ছিল। এটাকে সিলগালা করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের মালামাল জব্দ করা হয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে তিনি জানান। এ সময় খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলার চেষ্টা করছেন বৃষ্টিতে ও বন্যায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে, আসলে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তাদের কাছে যে তথ্য এসেছে, তাতে দেখা গেছে, অতি বৃষ্টি, ঝড় ও পাহাড়ি ঢলে মোট ৭৮ হাজার ৯৮৭ টন চাল নষ্ট হয়েছে। তবে বাস্তবে এই ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হবে বলে সূত্রটি মনে করছে। এ বছর ২ কোটি ১১ লাখ ৫৭ হাজার ৮৬৩ টন চাল উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছর ছিল ২ কোটি ৮ লাখ ৮৫ হাজার ২৬৩ টন। তাই এখন পর্যন্ত ঝড়, বৃষ্টিতে যে পরিমাণ ফসল নষ্ট হয়েছে তাতে মোট চাল উৎপাদনে বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র চালের বাজার অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। অবৈধ মজুতদারদের ধরতে অভিযানের পাশাপাশি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। অবৈধ মজুতের তথ্য জানাতে কন্ট্রোল রুমের +৮৮০২২২৩৩৮০২১১৩, ০১৭৯০-৪৯৯৯৪২ এবং ০১৭১৩-০০৩৫০৬ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে ।