বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: করোনার জেরে প্রবল ধাক্কা খাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। এ অবস্থার মধ্যে রাশিয়ার সাথে পাল্টাপাল্টিতে সৌদি আরব তাদের তেলের বিক্রয়মূল্য আনুষ্ঠানিকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। প্রায় ৩০ শতাংশ পড়ে গিয়েছে তেলের দাম। ১৯৯১-এ উপসাগরীয় যুদ্ধের পর এই প্রথম এতটা দাম পড়ল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিশোধিত তেলের দাম কমায় লাভবান হবে বাংলাদেশের মতো তেল আমদানিকারক দেশগুলো।
সৌদি আরব এপ্রিল থেকেই তেলের উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতি দিন ১ কোটি ব্যারেল অতিরিক্ত তেল উৎপাদন করবে বলে জানিয়েছে তারা। আর তার জেরেই বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম হু হু করে পড়তে শুরু করে।
সোমবার এশিয়ার বাজার খোলার কিছু ক্ষণের মধ্যেই দাম ৩০ শতাংশ কমে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌদির এই সিদ্ধান্ত সরাসরি আন্তর্জাতিক তেল বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। তেলের উৎপাদন বাড়ানো এবং দাম কমানো নিয়ে ইতিমধ্যেই ঠান্ডা যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে সৌদি আরব এবং রাশিয়ার মধ্যে।
বিশ্বের বৃহত্তম তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব। তার পরেই স্থান রাশিয়ার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়াকে শায়েস্তা করতেই তেলের উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব।
আজ ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম শতকরা ২৬ ভাগ বা ব্যারেল প্রতি ১১.৮১ ডলার কমেছে। গ্রিনিস মান সময় সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে এই দাম কমে দাঁড়ায় ৩৩.৪৬ ডলার। এর আগে দাম কমে দাঁড়িয়েছিল ৩১.০২ ডলার। ২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির পর এটাই ব্রেন্টের সর্বনিম্ন দাম।
১৯৯১ সালের ১৭ই জানুয়ারি থেকে প্রতিদিন তেলের দাম পতনের যে রেকর্ড তার মধ্যে আজ সোমবার ব্রেন্ট ফিউটারের পতন সবচেয়ে বেশি।
বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম গত কয়েক মাস ধরেই কমছিল। ফলে তেল উৎপাদক এবং রফতানিকারক দেশগুলোর ব্যবসায় প্রভাব পড়ছিল। অপরিশোধিত তেলের দাম যাতে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে সম্প্রতি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ( ওপেক) সদস্য দেশগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিল। সেখানে সদস্য দেশগুলোকে তেল উৎপাদন কমানোর কথা বলা হয়। কিন্তু তাতে সায় দেয়নি অধিকাংশ সদস্যই। ফলে বৈঠক ভেস্তে যায়।
বিরাজমান অবস্থায় সতর্কতা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনের এআরএম এনার্জির কৌশলগত বিশ্লেষক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কিথ বারনেট। তিনি বলেছেন, তেলের এই দরপতন দু’এক মাসের বেশি স্থায়ী হতে দেয়া উচিত হবে না। তা নাহলে করোনা ভাইরাস নিয়ে বৈশ্বিক বাজারে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে এবং ক্রেতাদের আস্থা পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দায় ভূমিকা রাখবে।