বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের টিম বৃহস্পতিবার বন্দর ও কাস্টমস পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন।
বন্দর ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান, নৌ পরিবহন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ শীর্ষ গোয়েন্দা প্রধান, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্হিত ছিলেন।
বৈঠকসূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে পাঁচ কন্টেইনার মদের চালান ধরা পড়ার ক্ষেত্রে কাস্টমসের মূল বক্তব্য হচ্ছে কয়েকটি ইপিজেডে থাকা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জাল করে এবং বন্দর থেকে কনটেইনার বের করার ক্ষেত্রে স্ক্যানিং রিপোর্টও জাল করে কনটেইনারসমূহ বের হয়। কাস্টমসের মতে ইপিজেডের কারখানার পণ্য আমদানির অনুমতি বা আইপি জালিয়াতি করা হয়েছে।
বলা হয়, আইপির পাসওয়ার্ড হ্যাক করে নির্দিষ্ট কারখানার পক্ষে আমদানির অনুমতিপত্র দেখানো হয়েছে। কিন্তু একটি পণ্য আমদানির পর সংশ্লিষ্ট কারখানার আইপি জেনুইন কিনা তা পরীক্ষার দায়িত্ব কাস্টমসের নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের। কিন্তু কাস্টমসের এআইআর (অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ) এর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সবকিছু জাল করে শুল্কায়ন করা হয়েছে। আবার ঐ জাল শুল্কায়নসহ কনটেইনার অনচেসিস ডেলিভারির ক্ষেত্রে (আমদানিকারকের নির্দিষ্ট গন্তব্যে সরাসরি নিয়ে যাওয়া) যে স্ক্যানিং করা হয়েছে বলে দেখানো হয় তা-ও জাল ছিল।
বিগত কয়েক বছর আগে অনুরূপভাবে চট্টগ্রাম কাস্টমসের মাধ্যমে একই পদ্ধতিতে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক অবৈধ ও মিথ্যা ঘোষণার পণ্য খালাসের পর্যায়ে তত্কালীন কাস্টমসের শুল্ক গোয়েন্দা আটক করে। সে সময় কয়েক হাজার কোটি টাকার সিগারেট, মদসহ বিভিন্ন পণ্য আটক করা হয়। সে সময়ও সংশ্লিষ্ট শুল্ক কর্মকর্তাদের উদাসীনতা এবং স্ক্যানিং রিপোর্টের জালিয়াতির কথা বলা হয়। তারপরও চট্টগ্রাম কাস্টমসের পণ্য খালাসে প্রক্রিয়াগত ত্রুটিসহ ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃত গাফিলতির সংশোধন হয়নি। বিশেষ করে স্ক্যানিংয়ের রিপোর্ট জাল করার কথা প্রতিটি ক্ষেত্রে বলা হয়। কিন্তু স্ক্যানিং রিপোর্টের ক্ষেত্রে প্রতিটি গেটে অনলাইন সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না। কনটেইনার স্ক্যানিং হয়েছে বলে কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সিল ও স্বাক্ষর করা হয়। কাস্টমসের এআইআরর ডেপুটি কমিশনার সাইফুল আলম জানান, এটি ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের বিষয়।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চোরাচালানের সময় আটক পাঁচটি চালানে প্রায় ৭৮ হাজার লিটার মদ আটকের পর বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১৫০টি চালান কাস্টমস কতৃর্পক্ষ তাদের নজরদারিতে এনেছে। কাস্টমসের পক্ষ থেকে বলা হয়, চালানগুলো কায়িক পরীক্ষার মাধ্যমে খালাস দেওয়া হবে। তাছাড়া আটক পাঁচটি চালানের জন্য পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।