Home রাজনীতি সিলেট বিএনপি নেতাদের যেকারণে ঢাকায় তলব

সিলেট বিএনপি নেতাদের যেকারণে ঢাকায় তলব

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

সিলেট: মেয়াদোর্ত্তীণ কমিটি ও শীর্ষ নেতাদের অনেকের নিষ্ক্রিয়তায় স্থবির হয়ে পড়েছিল সিলেট মহানগর বিএনপি। এই অবস্থা থেকে দলীয় কার্যক্রম গতিশীল করতে ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মেয়াদোর্ত্তীণ কমিটি ভেঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছিল ২৯ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি। সিলেট মহানগরীতে সাংগঠনিক অবস্থা আরও জোরদার করকে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কিন্তু আসেনি প্রত্যাশিত গতি। বরং বিভিন্ন ইস্যুতে ঐক্যে ফাটল ধরে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন নেতাকর্মীরা। এই অবস্থায় সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের ঢাকায় তলব করা হয়েছে। আজ রবিবার ঢাকায় তাদের সাথে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চুয়ালি সভা করার কথা রয়েছে।

সিলেট মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে দুই বলয়ে বিভক্ত। এক পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ও অপর পক্ষে কেন্দ্রিয় সদস্য, সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিভিন্ন ইস্যূতে দুই বলয়ের মধ্যকার বিভক্তি প্রকাশ্যে আসে।

সর্বশেষ এই বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ পেয়েছে গত মঙ্গলবার। ভোলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা আবদুর রহিম নিহতের প্রতিবাদে কেন্দ্রিয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল করে মহানগর বিএনপি। ওইদিন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী ও সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পৃথক মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। খন্দকার মুক্তাদির বলয়ের নেতা হিসেবে পংকীর ও আরিফুল হক চৌধুরী বলয়ের নেতা হিসেবে মিফতাহ সিদ্দিকীর পরিচিতি রয়েছে। ওইদিন রেজিস্ট্রারি মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকী। কিন্তু বিরোধ দেখা দেয় সভা পরিচালনা নিয়ে। সদস্য সচিব হিসেবে মিফতাহ সিদ্দিকী সভা পরিচালনা করার কথা থাকলেও মুক্তাদির বলয় তার সাথে যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে রাখার দাবি জানান। এ নিয়ে বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে মিফতাহ সিদ্দিকী ক্ষুব্ধ হয়ে তার নেতাকর্মীদের নিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন। পরে মিফতাহ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আরিফ বলয়ের নেতাকর্মীরা আলীয়া মাদ্রাসা মাঠের সামনে থেকে মিছিল বের করেন।

এর আগে গত ১৮ জুলাই রাতে আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকীর বাসায় মহানগর বিএনপির বর্ধিত সভা ছিল। সেই সভায় সদস্যসচিব মিফতাহ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে একাধিক যুগ্ম আহŸায়ক ক্ষোভ ঝাড়েন ও বাগবিতন্ডায় জড়ান। এই ঘটনার পর থেকে উভয় বলয়ের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়তে থাকে। গত ৩০ জুলাই ‘লাগামহীন লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনা’র প্রতিবাদে সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদমিনারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে যাননি মিফতাহ সিদ্দিকী ও তার অনুসারীরা।

দলীয় সূত্র জানায়, সিলেট মহানগর বিএনপির এমন বিভক্তি ও আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ১০ মাসের মধ্যে সকল ওয়ার্ড কমিটি করে সম্মেলন করতে না পারায় ক্ষুব্ধ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই বিভক্তি নিরসন ও দলের মধ্যে ঐক্য স্থাপনে ঢাকায় তলব করা হয়েছে নেতাদের। আজ রবিবার বিকেল ৪টায় এই সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তারেক রহমান।

এ প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। এখানে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন। সবাই মিলে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন।’ ঢাকার বৈঠকে সাংগঠনিক দিক নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।

মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর ১০ মাস চলে গেছে। এই সময়ের মধ্যে আশানুরূপ সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার হয়নি। সাংগঠনিক অবস্থা জানতে এবং আগামীতে কিভাবে সংগঠন চালাতে হবে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে তারেক রহমান মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দদের ঢাকায় ডেকেছেন।’