নোভেল করোনাভাইরাস (2019-ncov)সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোম) ভাইরাসেরই মতো, মার্সের (মিডল ইস্ট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোম) সঙ্গেও এদের বিস্তর মিল। সংক্রামিত হওয়ার পরে অন্তত ৩৭ দিন এরা বেঁচে থাকে রোগীর শ্বাসযন্ত্রে (Respiratory Tract)। সেখান থেকে খাদ্যনালী দিয়ে বাহিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে রক্তে। ধীরে ধীরে এদের আক্রমণের শিকার হয় শরীরে কোষ-কলা। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।
সিঙ্গল স্ট্র্যান্ডেড এই আরএনএ ভাইরাস যে আর পাঁচটা ফ্লু ভাইরাসের মতো নয় সেটা এখন বিলক্ষণ জানা গেছে। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের চরিত্র বুঝতে হিমশিম খাচ্ছেন বিজ্ঞানী-গবেষকরা। চিনা অ্যাকাডেমি অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংক্রমণ চট করে ধরা পড়ে না। শ্বাসযন্ত্রে প্রথম থাবা বসায় করোনাভাইরাস। প্রথমে মামুলি সর্দি-কাশি দিয়ে উপসর্গ শুরু হয়। এরপর বাড়তে থাকে শরীরের তাপমাত্রা। কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হয় তীব্র শ্বাসকষ্ট। অনেকের আবার নিউমোনিয়ার সংক্রমণও ধরা পড়ে। ৩৭ দিন ধরে শ্বাসযন্ত্রকে দুর্বল করে এই মারণ ভাইরাস। শ্বাসের সমস্যা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়, ভাইরাস তখন গুটি গুটি খাদ্যনালী দিয়ে নেমে এসে সটান রক্তকণিকাগুলিকে আক্রমণ করে।
ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্বাসযন্ত্রে থাকার সময়েই ভাইরাস আক্রান্তের ধারেকাছে গেলে সেই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। কারণ হাঁচি-কাশি, অথবা লালা-থুতুর মধ্যে দিয়ে এরা বাহিত হয়ে অপরজনকে আক্রমণ করতে পারে। বাহিত হওয়ার জন্য এদের আধার দরকার হয়, ‘এয়ার ড্রপলেট’ সেই আধারের কাজ করে। কোনও সংক্রামক ব্যক্তিকে তাই অন্তত ২০ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। যে কোনও মানুষের সংস্পর্শ থেকে তাকে দূরে রাখার চেষ্টা হয়।
করোনাভাইরাসের যে জিনোমগুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সার্স-সিওভি-২। এই স্ট্রেনের সাঁড়াশি চাপেই সিওভিডি-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বজুড়ে। করোনার এই স্ট্রেনের মতিগতি এখনও বুঝে উঠতে পারেননি গবেষকরা। প্রাথমিক গবেষণায় যেটা দেখা গেছে, এই স্ট্রেন শ্বাসযন্ত্রকে দুর্বল করে রক্তকণিকাগুলিকে ভেঙেচুড়ে দেয়। একে একে হোস্ট-সেলের রিসেপটর বা বাহককে আঁকড়ে ধরে কোষগুলিকে নষ্ট করতে থাকে। ফলে রোগীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি দুর্বল হয় অথবা বয়স্ক রোগী বা শিশুদের ক্ষেত্রে এপ পরিণতি মৃত্যুও হতে পারে।
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক