Home Second Lead রুবেলের মরদেহ নিয়ে কাড়াকাড়ি ৭ স্ত্রীর

রুবেলের মরদেহ নিয়ে কাড়াকাড়ি ৭ স্ত্রীর

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের নিহত পাঁচ আরোহীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুর পৌনে একটার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত হয়।

ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক নাসেদ জামিল বলেন, নিহতদের বিষয়ে সুরতহাল প্রতিবেদনে যা লেখা আছে, আমরা ময়নাতদন্তে তাই পেয়েছি, ব্যতিক্রম কিছু নয়। নিহত প্রত্যেকের একাধিক পর্যবেক্ষণ (মাল্টিপল ফাইন্ডিংস) রয়েছে। প্রতিটার আলাদা করে বর্ণনা (ডেসক্রাইব) দেয়া সম্ভব নয়। সুরতহাল প্রতিবেদনে যেভাবে বর্ণনা করা আছে, হুবহু আমরা তাই পেয়েছি।

লাশ কখন হস্তান্তর করা হবে জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক বলেন, আমাদের কাজ শেষ। এখন পুলিশ অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।

এদিকে ওই পরিবারের গৃহকর্তা নিহতের রুবেলের লাশের দাবিতে একে একে সাতজন স্ত্রী হাজির হয়েছেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের সামনে। তারা সবাই নিহত রুবেলের স্ত্রী দাবি করছেন। মর্গের সামনে হাজির হয়েছেন স্ত্রীদের ছেলে-মেয়েরা। আজ দুপুরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের সামনে এ দৃশ্য দেখা যায়।

নিহত রুবেলের স্ত্রীদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রুবেলের প্রথম স্ত্রীর নাম রেহানা। তার সঙ্গে বিয়ে হয় ৩০ বছর আগে। সেই ঘরের প্রথম ছেলেসন্তান হৃদয় সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরেন। প্রথম স্ত্রী রেহানার ভগ্নিপতি রহমত জানান, আমরা শরীয়তপুরে থাকি। আমাদের রুবেল বায়িং হাউজের ব্যবসা করতেন বলে জানতাম।

আমরা তেমন একটা ঢাকায় আসতাম না। মৃত্যুর খবর শুনে আসলাম। শুনেছিলাম সে দ্বিতীয় আরেকটা বিয়ে করেছেন।

এদিকে রুবেলের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম শাহেদা। তার ঘরে রত্না নামে ১৪ বছরের একটি মেয়ে আছে। তার বাড়ি মানিকগঞ্জ সিংগাইর এলাকায়। ঢাকায় উত্তরা থাকেন। তবে দ্বিতীয় স্ত্রী শাহেদা নিজেকে প্রথম স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে ১৯৯৯ সালে বিয়ে হয়েছে। আমিই প্রথম। আমাকে সে কখনো বলেনি তার আরেকজন স্ত্রী আছে। রুবেলের তৃতীয় স্ত্রী দাবি করা আরেক নারীর নাম সালমা আক্তার পুতুল। মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় থাকেন তিনি। ঘরে বসে সেলাই মেশিনের কাজ করেন। ২০১৪ সালে রুবেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। রুবেলের সম্পর্কে তিনি জানতেন সে একজন ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী। তবে, রুবেলের সঙ্গে বিয়ের কোনো সনদ নেই তার। এরপর পাতা খন্দকার নামে আরেকজন স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া যায়। যাকে রুবেল বিয়ে করেন ২০২০ সালের দিকে। এছাড়া আরো তিনজন নারী রুবেলের স্ত্রী দাবি করে মর্গের সামনে লাশের অপেক্ষা করছেন।

সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে উত্তরার জসীমউদ্দীন এলাকায় ক্রেন দিয়ে একটি গার্ডার ওপরে তোলার সময় নিচে পড়ে যায়। এ সময় চলমান একটি প্রাইভেট কার গার্ডারের নিচে চাপা পড়ে। প্রাইভেটকারে আরোহী ছিলেন সাত জন। ছিলেন নববিবাহিত হৃদয়ের বাবা রুবেল (৬০), হৃদয়ের শাশুড়ি ফাহিমা (৪০), কনে রিয়া মনির খালা ঝরনা (২৮), ঝরনার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। শুধু বেঁচে আছেন হৃদয় ও রিয়া।