বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
দিল্লি: সরকারিভাবে দেশে বিয়ের বয়স ছেলেদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২১ বছর, মেয়েদের ১৮ বছর। কেন্দ্রীয় সরকার ধর্ম নির্বিশেষে ছেলে মেয়ে উভয়েরই বিয়ের বয়স ন্যূনতম ২২ করতে চেয়ে সংসদে বিল এনেছে। যদিও তা পাশ হয়ে আইন হয়নি। এমনই এক সন্ধিক্ষণে মঙ্গলবার একটি মামলায় দিল্লি হাইকোর্ট বলেছে, মুসলিম মেয়েরা বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোর পর বিয়ে করতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের বাবা-মায়ের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। আদালতের বক্তব্য, মহামেডান ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ হওয়া জরুরি নয়, মত আদালতের।
বিচারপতি জসমিত সিং এক মুসলিম দম্পতির বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় এই অভিমত প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট মামলায় মেয়েটির পরিবার অভিযোগ করে পাত্রীর বয়স আঠারো হয়নি। মাত্র পনেরো। তাই এই বিয়ে বৈধ নয়। গত ১১ মার্চ মেয়েটি বাবা-মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করে। পাত্রের বয়স ২৫। মেয়েটি যদিও আদালতে আধার কার্ড পেশ করে দাবি করে তাঁর বয়স উনিশের বেশি। বাবা-মা আধার কার্ডের বয়স মানতে নারাজ।
এই অবস্থায় আদালত বলে মেয়ের বয়স ১৮ না হলেও এই বিয়ে বৈধ। কারণ সে বয়ঃসন্ধি ছুঁয়েছে। মহামেডান আইন অনুসারে, কোনও মেয়ে বয়ঃসন্ধিকালে তার বাবা-মায়ের সম্মতি ছাড়াই বিয়ে করতে পারে এবং ১৮ বছরের কম বয়স হলেও স্বামীর সঙ্গে বসবাস করার অধিকারী।
বিচারপতি সিং আরও বলেন, মেয়েটি যদি ইচ্ছাকৃত বিয়েতে সম্মতি দিয়ে থাকে এবং সুখী হয় তবে রাষ্ট্র তাঁর ব্যক্তিগত পরিসরে প্রবেশ করে দম্পতিকে আলাদা করে দিতে পারে না। বিচারপতির কথায়, তা করা হলে সেটি হবে রাষ্ট্রের তরফে নাগরিকের ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলানো।
এই দম্পতি এপ্রিল মাসে আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালতের কাছে তাঁরা পুলিশি সুরক্ষা দাবি করে আর্জি জানায় যেন কেউ তাঁদের আলাদা করে না দেয়। মেয়েটির পরিবার দ্বারকা থানায় ছেলেটির বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা দায়ের করেছিল। অপহরণ ছাড়াও ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়। বাবা মায়ের দেওয়া বয়সের কথা বিবেচনা রেখে শিশুর উপর যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত পকসোর ধারাতেও মামলা হয়।
মেয়েটি আদালতে বাবা-মায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলে তাকে অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। পুলিশ ২৭ এপ্রিল শ্বশুর বাড়ি থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে শিশু কল্যাণ কমিটির সামনে হাজির করে। বিচারপতি আজ রায় দেননি। মেয়েটি আপাতত একটি সরকারি হোমে আছে।