Home ব্যাংক-বিমা এটিএম বুথ: যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি

এটিএম বুথ: যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি

এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন কারণে এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার বিষয়ে ঝামেলায় পড়তে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার সময় খেয়াল রাখা উচিত এমন বিষয়সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত।

১. বারবার ভুল পিন প্রদান থেকে বিরত থাকুন

কার্ডের পিন প্রদান করছেন, কিন্তু ভুল দেখাচ্ছে? সেক্ষেত্রে দুইবারের বেশি চেষ্টা না করাই শ্রেয়। বারবার ভুল পিন প্রদান করার কারণে এটিএম কার্ড লক হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও লিমিটের চেয়ে অধিকবার ভুল পিন প্রদান করার কারণে কার্ড এটিএম মেশিনের মধ্যে আটকে যেতে পারে, যা বেশ বিড়ম্বনার সৃষ্টি করতে পারে।

 

তাই জরুরি মুহুর্তে টাকা তোলার ক্ষেত্রে যদি পিন সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হয়, তবে বারবার পিন প্রদান করে টাকা তোলার চেষ্টা না করে তৎক্ষনাৎ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে উক্ত বিষয় সম্পর্কে জানানো শ্রেয়।

২. এক্সট্রা চার্জ এড়িয়ে চলা

ক্রস ব্যাংকিং এর ফলে এক ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে অন্য ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তোলা সম্ভব হয়। তবে এসব পার্টনার ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে গুণতে হতে পারে বাড়তি চার্জ। তাই এই বাড়তি ফি এড়িয়ে চলতে আপনি যে ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করছেন, উক্ত ব্যাংকের এটিএম বুথ খুঁজে নিয়ে সেখান থেকে টাকা তুলুন।

৩. কার্ড নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করা

কোনো এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার আগে আপনার কার্ড কোন নেটওয়ার্কে রয়েছে, তা নিশ্চিত করা জরুরি। কার্ডের নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে আপনি কোনো এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন কিনা।

যেমনঃ আপনি যদি ভিসা কার্ড ব্যবহার করে থাকেন, তবে ভিসা নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করে এমন বুথে টাকা তুলতে যেতে হবে। অন্যথায় ভিসা নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করেনা এমন বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন না।

৪. পিনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

একটি কার্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর পিন নাম্বার। কেউ আপনার কার্ডের পিন জেনে গেলে খুব সহজে আপনার কার্ড দিয়ে ফান্ড টান্সফার বা টাকা উইথড্র করতে পারবে। তাই আপনার কার্ডে থাকা অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পিনের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।

এটিএম বুথে কার্ডের পিন এন্টার করার সময় কেউ যাতে আপনার পিন দেখতে না পায়, সে বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। অনেক সময় একই এটিএম বুথে একাধিক মেশিন থাকে, যার ফলে উক্ত স্থানে একাধিক মানুষ উপস্থিত থাকতে পারে। এমন অবস্থায় নিজের কার্ডের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করুন।

৫. মেশিন আউট অফ সার্ভিস নয় তো?

অনেক সময় এটিএম বুথে থাকা মেশিন আউট অফ সার্ভিস থাকার কারণে কাঙ্খিত সার্ভিস পাওয়া যায়না। তাই কোনো এটিএম বুথে যাওয়ার পর আপনার কার্ড কাজ না করলে সেক্ষেত্রে আগে উক্ত মেশিন আউট অফ সার্ভিস কিনা তা চেক করে নিন।

৬. সময় জ্ঞান রাখা

এটিএম বুথে কোনো লেনদেনের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা, কার্ড এবং রিসিপ্ট নিয়ে নিতে হবে, তা না হলে বুথের মেশিন সেগুলো আবার টেনে ভিতরে নিতে পারে। তাই এমন বিড়ম্বনার মুহুর্ত এড়িয়ে চলতে টাকা, কার্ড এবং রিসিপ্ট বের হওয়ার পর তা সাথে সাথে নিয়ে নিন।

৭. কার্ডের ডিটেইলস শেয়ার না করা

অনেক সময় আমরা বিভিন্ন ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে অন্যকে নিজের কার্ডের তথ্য প্রদান করে থাকি লেনদেন সম্পাদনের জন্য। কিন্তু এই কাজটি সম্পূর্ণ ভুল। কখনো কার্ডের পুরো নাম্বার, সিভিভি, ওটিপি এবং পিন কারো সাথে শেয়ার করা উচিত নয়। শুধুমাত্র পরিচিত বা অপরিচিত নয়, এমনকি ব্যাংকের কোনো কর্মীর সাথেও এসব তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকুন।

ব্যাংকের নাম করে আপনার কার্ডের তথ্য জালিয়াতির খপ্পরে পড়তে না চাইলে সাবধান থাকা একান্ত জরুরি। মনে রাখবেন, ব্যাংক কখনো নিজ থেকে যোগাযোগ করে আপনার কার্ড বা ব্যাংকের ডিটেইলস জানতে চাইবেনা। তাই কার্ড সোয়াইপের জন্য কাউকে দেওয়াই হোক বা ব্যাংক থেকে আসা ফ্রড কলে হোক, কার্ড বা ব্যাংকের ব্যক্তিগত তথ্য কারো সাথে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।

৮. কোনো সমস্যা হলে করণীয়

এটিএম বুথ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ম সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। এটিএম বুথ ব্যবহার করে টাকা তোলার সময় কোনো সমস্যায় পড়লে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন। সবসময় ব্যাংকের কল সেন্টারের নাম্বার ও কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার হাতের কাছে রাখুন। এতে কোনো সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ উক্ত ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হবে।

কার্ড হারিয়ে ফেললে সেক্ষেত্রে প্রথমে ফোন করে ব্যাংককে জানিয়ে দিন ও কার্ড ব্লক করে দিন। এরপর প্রয়োজনীয় তথ্যসহ ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যোগাযোগ করে নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করুন। কার্ডে কোনো সমস্যা হলে অপেক্ষা না করে তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে বাচঁতে পারেন।